শিক্ষক রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন
দলীয় লেজুড়বৃত্তি বন্ধ করতে হবে
সম্পাদকীয়-১
🕐 ১০:৩৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৩, ২০১৯
একটি বুদ্ধিমান, শিক্ষিত, মার্জিত এবং রুচিসম্পন্ন সমাজ তৈরিতে শিক্ষকদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। কেননা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তাদের হাতেই গড়ে ওঠে। এ দেশে বহুকাল আগে থেকেই যেমন ছাত্র রাজনীতি প্রচলিত তেমনি এর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত শিক্ষক রাজনীতি। বলা বাহুল্য, শিক্ষকরা না চাইলে কোনো দিনও ছাত্রছাত্রীরা রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ হতো না। সেই সূত্রেই বর্তমানেও শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়ই দেশের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন। অনেক আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্বও দিয়েছেন শিক্ষক-ছাত্ররা। অথচ প্রায় তিন দশক পর হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর শিক্ষকদের রাজনীতি হলো ‘প্রশ্নবিদ্ধ’।
খোলা কাগজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডাকসু নির্বাচনের ভোট নিয়ে এবার শিক্ষকের ভূমিকা-নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শিক্ষার্থী, অভিভাবক, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক মহল ও সাধারণ মানুষও সমালোচনামুখর হয়ে উঠেছেন শিক্ষক নেতাদের ভূমিকা নিয়ে। অনেকে ধারণা করছেন, তারা হয়তো কোনো রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করেছেন। ডাকসু নির্বাচন ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ হওয়ার আগে এবং পরে অনেকেই মনে করেছেন, তারা চাইলেই নির্বাচনের ভোট অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হতে পারত। যে কারণে দেশের সচেতন মহল ‘জাতির বিবেক’দের (শিক্ষক) দিকেই এখন প্রশ্নের তীর ছুড়ছেন।
একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সব নাগরিকের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার অধিকার রয়েছে। একটি দলের হয়ে রাজনীতি যে কেউ করতে পারে। তাই বলে শিক্ষক হয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের আশা-আকাক্সক্ষার মূল্যায়ন না করে কোনো নির্দিষ্ট দলের পক্ষে সাফাই গাওয়া নিশ্চয়ই উচিত নয়। যে কারণে ডাকসু নির্বাচনে তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে অনেকে বলছেন, দলীয় আনুগত্যে শিক্ষকরা ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। অনেকে বলছেন, ক্ষমতা কাঠামোর সঙ্গে জড়িত শিক্ষকরাই অনিয়ম করেছেন। অথচ এমনটি কারও প্রত্যাশিত ছিল না। রাজনৈতিক ব্যক্তিরা যে যাই করুক না কেন, শিক্ষকদের অন্তত তাদের সঙ্গে তাল মেলানো উচিত নয়।
এর আগে দেশে অনেক নির্বাচন হয়েছে। অনেক নির্বাচনে কারচুপিও হয়েছে। রাজনৈতিক মহল থেকে অনেক নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধও করা হয়েছে। কিন্তু ডাকসু নির্বাচনে যা হলো, তাতে শুধু নির্বাচন নয় শিক্ষকদের ভূমিকাও হলো প্রশ্নবিদ্ধ। এ যে জাতির জন্য অতি অপ্রত্যাশিত। ছাত্র-ছাত্রীর সামনের দিনগুলো সুন্দর করতে আলো দেখান শিক্ষক, ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করতে দেখান। তাদের কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন তোলা কোনো সহজ ব্যাপার নয়। এক্ষেত্রে তাদের আরও সংবেদনশীল হওয়ার বিকল্প নেই। বলা প্রয়োজন, শুধু ক্ষমতা ব্যবহার কিংবা দলীয় আনুগত্য নিয়ে তো নয়ই, কোনো কারণেই কেউ যেন শিক্ষকদের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে সে বিষয়টি তাদেরই মাথায় রাখতে হবে। সুন্দর ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে হলে শিক্ষকদের ‘কলঙ্কমুক্ত’ থাকতে হবে।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228