ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

প্রশ্নবিদ্ধ ডাকসু নির্বাচন

কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি

সম্পাদকীয়-১
🕐 ১০:৩৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ১১, ২০১৯

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বহুল প্রত্যাশিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট হলেও শেষ পর্যন্ত তা প্রশ্নবিদ্ধ হলো। অন্তত এই নির্বাচনটি যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, সেই দাবি ছিল সচেতন মহলের। কিন্তু তা হলো না। অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করল বেশির ভাগ ছাত্র সংগঠন। এ ছাড়া পুনঃতফসিল দাবি করেছে অনেকে। এমন পরিস্থিতিতে ঢাবির উপাচার্য অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চাইলেও বলেছেন, দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন উৎসবমুখর হয়েছে। অথচ সাধারণ ভোটাররা অভিযোগ করছেন, ভোট হয়েছে ‘অসংগতিপূর্ণ’, ‘নিয়ন্ত্রিত’।

তথ্য মতে, ডাকসু নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করে ধর্মঘটেরও ডাক দিয়েছে বেশ কয়েকটি ছাত্র সংগঠন। ভোটের আগেই ব্যালট বাক্সে সিল মেরে রাখার অভিযোগও এসেছে, যে কারণে হল সংসদ নির্বাচনের ভোটেরও কমবেশি একই অবস্থা। ভোট চলাকালেও বিক্ষোভ করেছে কয়েকটি ছাত্র সংগঠন। ঢাবি উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাওসহ পদত্যাগের দাবিও জানানো হয়েছে। এমনকি মারধরের ঘটনাও ঘটেছে। এদিকে ভোটের আগে ঢাবির ঐতিহ্যকে ‘কালিমালিপ্ত’ না করার দাবি জানানো হলেও আদতে তা কতটুকু বাস্তবায়িত হয়েছে, তা নিয়ে থেকে যাচ্ছে সন্দেহ। শুধু তাই নয়, এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিও যে ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলা বাহুল্য।

এদিকে ২৮ বছর পর ডাকসুর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও ‘দ্বিতীয় সংসদ’ হিসেবে খ্যাত এই জায়গাটি থেকেও আগ্রহ হারাচ্ছে উৎসুক সাধারণ জনগণ। অনেকের ধারণা ছিল, ছাত্র অধিকার সংরক্ষণের সবচেয়ে বড় এই প্রতিষ্ঠানটিতে হয়তো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে চলেছে। কিন্তু, আবারও সাধারণের ‘আশার গুড়েবালি পড়ল’। এই পরিস্থিতিতে দেশের ভোট ও নির্বাচন নিয়ে আমজনতার শঙ্কা আরও তীব্র আকার ধারণ করল। ইতোমধ্যেই ধাপে ধাপে দেশের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট হচ্ছে। সেখানেও ভোটারদের উপস্থিতি কম। মূলত, নির্বাচন নিয়ে জনগণের আগ্রহ এখন তলানিতে ঠেকেছে। এরই মধ্যে ডাকসু নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় হতাশ দেশের সচেতন নাগরিক মহল।

দেশের মানুষের মাতৃভাষা এবং স্বাধীনতাসহ প্রায় প্রতিটি আন্দোলনে এবং অধিকার আদায়ের প্রশ্নে ঢাবি কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। ডাকসুই যেহেতু সেখানকার ‘সংসদ’, তাই প্রত্যেকটি ছাত্রসংগঠনের দাবি অনুযায়ী যৌক্তিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। নির্বাচনে ভোটকে ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ হওয়া থেকে মুক্ত করতে যা করা দরকার তার সবই হাতে নিতে হবে। বলতেই হয়, ডাকসুও যদি পক্ষপাতপূর্ণ একটি সংগঠনে পরিণত হয়, তবে দেশের ছাত্র সমাজের ভবিষ্যৎও হবে অনিশ্চিত। আর দেশের ছাত্র সমাজের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হলে দেশও এগিয়ে যাবে অন্ধকারের দিকে। এ অবস্থা যেন না হয় সে জন্য যত দ্রুত সম্ভব ঢাবি প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper