সুপারশপে পচা মাংস
দোষীদের কঠোর শাস্তি দিন
সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:০০ অপরাহ্ণ, মার্চ ০৮, ২০১৯
দেশের অধিকাংশ খাবারেই রয়েছে ভেজালের অভিযোগ। চাল ডাল তেল নুন শাক-সবজি মাছ-মাংস; বাদ নেই কোনো খাদ্যদ্রব্য। কতিপয় মুনাফালোভী ব্যবসায়ী জনসাধারণের ভালোমন্দ বিবেচনা না করে জড়িয়ে পরে অসৎকাজে। খুচরা থেকে পাইকারি বাজার পর্যন্ত বিস্তৃত এই ব্যবসায়ী শ্রেণি। দুই একদিন পর পর এখানে-সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত ভেজাল খাবার প্রতিরোধে অভিযান পরিচালনা করে। এতে জেল-জরিমানাসহ দোষীদের শাস্তি দিলেও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভেজাল। সেই সঙ্গে লোভী ব্যবসায়ীরাও কোনো তোয়াক্কা না করে এগিয়ে যাচ্ছে অসৎ কাজের দিকে।
খোলা কাগজের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, বিপুল পরিমাণ পচা মাংস হিমাগার থেকে ক্রয় করে দেশের নামিদামি সুপারশপগুলো (সব রকমের পণ্য যেখানে পাওয়া যায়)। এবং যেহেতু উচ্চবিত্ত এবং মধ্যবিত্তরাই সুপারশপের ক্রেতা। তাই তারাই এবার পচা খাবারের ভুক্তভুগী। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, নির্দিষ্ট প্রমাণ থাকলেও সরকারের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো এ বিষয়ে কোনো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি এবং কার্যকর কোনো পদক্ষেপও নেয়নি। ভ্রাম্যমাণ আদালত সাময়িক জেল-জরিমানা করলেও পরবর্তীতে আবার সেখানেই দেদার চলছে ভেজাল ও পচা খাবারের ব্যবসা। যে কারণে নিরাপদ খাবার নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে দেশের সাধারণ ভোক্তাশ্রেণি।
ফরমালিন (একজাতীয় রাসায়নিক পদার্থ) দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খাবার অনেকদিন পর্যন্ত ভালো রাখা গেলেও তা মানবদেহের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। বেশি মাত্রায় ফরমালিনের কারণে শরীরে ক্যান্সারের মতো রোগ হতে পারে। এদিকে আসছে রোজার মাসকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে আমদানিকারকরা হিমাগারগুলোতে খাদ্যদ্রব্য মজুদ করছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই তাদের মজুদকৃত অনেক পণ্য হয়ে যায় পচা, বাসি এবং ভেজাল সমৃদ্ধ। যদিও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তারা বলছেন, রমজান মাসের আগ পর্যন্ত ভেজালবিরোধী অভিযান চলবে। এক্ষেত্রে শুধু অভিযান পরিচালনা ও জেল-জরিমানা করলে আসল কাজ পূর্ণ হবে না। মূলত, দোষীদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। দেশের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য এটি ভীষণ জরুরি।
আমরা বলতে চাই, শক্তিশালী এবং মেধাবী জাতি গড়ে তুলতে নিরাপদ এবং পুষ্টিকর খাবারের বিকল্প নেই। ভেজাল ও পচা খাবার ধীরে ধীরে জাতিকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এর থেকে বাঁচতে হলে যত দ্রুত সম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তদন্তকারী সংস্থাগুলোকেও হেলাফেলা বা উদাসীনতার মনোভাব ত্যাগ করে নিয়মিত নজরদারি চালাতে হবে। এক্ষেত্রে জনস্বার্থ রক্ষায় দেশের বৃহৎ দুই প্রতিষ্ঠান জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে আরও সক্রিয় হতে হবে। একটি সুস্থ জাতি গড়ে তুলতে হলে, এখনই পদক্ষেপ জরুরি।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228