ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রোহিঙ্গা সংকটের নতুন মাত্রা

সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কাম্য

সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:২৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২০, ২০১৯

বাংলাদেশে এখন রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা ১১ লাখেরও বেশি। সারা বিশ্বে এটা কোনো একটি দেশে সর্বাধিকসংখ্যক শরণার্থীর রেকর্ড। ১৬ কোটিরও বেশি জনভারে এমনিতেই বিপর্যস্ত এ দেশে বছরের পর বছর ধরে বসবাসরত এত শরণার্থীর ভার বহন করা যে অত্যন্ত কষ্টকর তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

কথা ছিল আন্তর্জাতিক আইন মেনে মিয়ানমার দ্রুততম সময়ে তাদের নাগরিক রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে। কিন্তু মিয়ানমার আজ পর্যন্ত একজনকেও ফিরিয়ে নেয়নি। আন্তর্জাতিক মহলও যেন ধীরে ধীরে ভুলতে বসছে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী ছোট্ট এই দেশটিকে। সম্প্রতি গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো এর সঙ্গে যোগ হয়েছে- চীন, ভারত, সৌদি আরবের মতো দেশগুলোর বৈরী আচরণ।

এ অঞ্চলের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ চীন রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের পক্ষে অবস্থান করছে। আরেক শক্তিধর বৃহৎ প্রতিবেশী ভারত মিয়ানমারকে কোনো ধরনের চাপ দেওয়া তো দূরের কথা, উল্টো সাম্প্রদায়িক মনোভঙ্গি থেকে ভারতে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের পুশব্যাক করছে বাংলাদেশে। সৌদি আরবের মতো নেতৃস্থানীয় মুসলিম দেশও সে দেশে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে এটাকে একটা স্থায়ী রূপ দেওয়ার জন্যই যেন সবাই সচেষ্ট হয়ে উঠেছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ক্ষেত্রে মিয়ানমারের ভূমিকা অত্যন্ত ধীর গতি বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রত্যর্পণের বিষয়ে আশানুরূপ অগ্রগতি না হওয়ায় গভীরভাবে হতাশ জাতিসংঘ। এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জোর করে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনের নিষেধাজ্ঞা আছে। আবারও নির্যাতনের বা গণহত্যাকাণ্ডের মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কায় রোহিঙ্গা শরণার্থীরা নিজেরাও স্বদেশে ফিরে যেতে আগ্রহী নয়।

এদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের পূর্ণ নিশ্চয়তা দিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলকে আরও সক্রিয় হতে হবে। সেই সঙ্গে চীন, ভারত, সৌদি আরব প্রভৃতি বন্ধুপ্রতিম দেশও বাংলাদেশের অবস্থার কথা আরেকটু সদয়ভাবে বিবেচনা করবে, এটাই প্রার্থিত। বিপন্ন ও বিপর্যস্ত একটি মানবগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিতে গিয়ে বাংলাদেশ নিজেই বিপন্ন ও বিপর্যস্ত হতে বসেছে। এর নিরসনে বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতাও আরও জোরদার করা উচিত।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper