ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বিদেশি গাছের আগ্রাসন

বন্ধ করা সময়ের দাবি

সম্পাদকীয়
🕐 ৯:১০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৯, ২০১৯

বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে তথা বনাঞ্চলে একটা দৃশ্য এখন নিত্যপরিচিত। সেটা হলো বিদেশি গাছের ব্যাপক উপস্থিতি। বাংলার চিরচেনা আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, লিচু, আমলকি প্রভৃতি ফলদ এবং শিমুল, বকুল, চাঁপা, শিরীষ প্রভৃতি ফুলের গাছের সংখ্যা দিন দিন কমছে। তার বদলে বাড়ছে দ্রুত বর্ধনশীল বিদেশি গাছগুলোর সংখ্যা।

খোলা কাগজে গত শনিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, ’৯০-এর দশকে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় বকশীগঞ্জের পাহাড়ি এলাকায় জুম চাষ বন্ধ করে পরিবেশঘাতী আকাশমণির বনায়ন করায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওই এলাকার জুম চাষিরা। জীবিকা হারিয়ে অসহায় আদিবাসী গারোরা এখন দিনমজুরে পরিণত হয়েছে।

সত্যি বলতে কী, বাংলাদেশের ইকো সিস্টেমে বিপর্যয় ডেকে আনছে এই গাছগুলো। আকাশমনি, সেগুন, মেহগনি প্রভৃতি গাছ রোপণের মাধ্যমে বনায়ন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বলে জানিয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠন বাপা। বাংলাদেশের পরিবেশের স্বার্থে এসব বিদেশি জাতের গাছ রোপণ না করার পরামর্শ দিয়েছে সংগঠনটি।

বাপার তথ্যমতে, এ গাছগুলো মাটির গভীর থেকে প্রচুর পানি টেনে নেয়। এর ফলে আশপাশে অন্য গাছ লাগানো হলে তারা পানির অভাবে বড় হতে পারে না। গাছের পাতা ও ফুলের রেণু প্রাণীদেহের জন্যও অত্যন্ত ক্ষতিকর, এতে অ্যাজমা, হাঁপানিসহ ফুসফুসের অনেক রোগ হয়।

জানা গেছে, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন ২০১২ অনুযায়ী, আকাশমনি গাছ রোপণ ক্ষতিকর হিসেবে নিষিদ্ধ করা হয়। বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে আকাশমনি বনায়নের বিরুদ্ধে ’৯০ দশকে আন্দোলনও গড়ে তোলেন আদিবাসীরা। বিদেশি গাছের আগ্রাসন থেকে বাংলাদেশের প্রকৃতিকে মুক্ত করা এখন সময়ের দাবি। এ ধরনের বনায়নে বিশেষ করে দেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলো যদি বঞ্চিত বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে সরকারের উচিত হবে তাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া। কারণ, সংবিধান অনুযায়ী প্রত্যেক মানুষের সমান সুযোগ পাওয়ার অধিকার রয়েছে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper