দুর্নীতির অভিশাপ
নির্মূলে চাই কঠোরতর পদক্ষেপ
সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:১৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০১৯
বাংলাদেশের জন্য সম্প্রতি বছরগুলোতে অনেক সুসংবাদ রয়েছে, প্রবৃদ্ধি ৮-এর কাছাকাছি পৌঁছেছে, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমনে সরকার দেশ-বিদেশে সুনাম কুড়িয়েছে, পদ্মা সেতুর মতো মেগা প্রজেক্ট নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে আমরাও কারও চেয়ে কম নয়। পূর্ববর্তী বছরগুলোর মতো রাজনৈতিক সহিংসতায় দেশের অর্থনীতি থমকে যায়নি।
নিম্ন আয়ের দেশ থেকে উতরে আমরা এখন মধ্যম আয়ের দেশের দিকে ধাবিত হচ্ছি। বিশ্বে বাংলাদেশ এখন ৪১তম অর্থনীতির দেশ। এত অর্জনের পরেও আমরা দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের খেতাব থেকে বের হতে পারছি না। বাংলাদেশ এখনো বিশ্বের ১৭তম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে চিহ্নিত (টিআই রিপোর্ট-২০১৮)।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি যথার্থই বলেছেন, তার সরকার যে হারে সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়িয়েছেন, এর দ্বিতীয় উদাহরণ সম্ভবত পৃথিবীর কোনো দেশে নেই। এরপরও কেন দুর্নীতি হচ্ছে, সে প্রশ্ন রেখে তিনি সরকারি কর্মচারীদের মন-মানসিকতা পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন। ১০ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে দুর্নীতি নির্মূলে সরকারের বার্তা প্রশাসনের তৃণমূলে পৌঁছে দিতেও তিনি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতাসীন হয়েই আওয়ামী লীগ দুর্নীতি প্রতিরোধের দিকে মনোযোগ দিয়েছে, এটা একটি সুসংবাদ। ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা বেড়েছে। দুর্নীতি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে দলটি কার্যকর উদ্যোগ নেবে বলেই আশায় বুক বাঁধছে জনসাধারণ। তবে অনেকেই মনে করছেন, শুধু প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছা কিংবা বেতন বাড়িয়ে দুর্নীতির মতো মারাত্মক সামাজিক ব্যাধিকে বিদায় করা সম্ভব নয়। দুর্নীতিকে নির্মূল করতে হলে সরকারের সদিচ্ছার পাশাপাশি দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান দুদককে আরও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। সেই সঙ্গে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ার মাধ্যমে দুর্নীতির মূলোৎপাটন করতে হবে।
টিআইবি এক গবেষণায় বলেছে, আইনি কাঠামো বিচারে দুদক একটি শক্তিশালী আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান। কিন্তু নিজেদের ক্ষমতা ও শক্তি ব্যবহারে রয়েছে অনীহা। ফলে দুর্নীতি দমনে এই প্রতিষ্ঠানও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই প্রতিষ্ঠানটির ওপর থেকে জনগণের আস্থা কমছে। শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, বেসিক ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক কেলেঙ্কারির নায়কদের কিংবা সরকারের ভেতরে থাকা প্রভাবশালী এমপি-মন্ত্রীদের দৃশ্যত কোনো বিচার হয়নি। তাই দেশের সচেতন মানুষ মনে করে এসব বৃহৎ দুর্নীতি রোধ না করে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দুর্নীতি রোধ কিংবা শুধু বেতন বৃদ্ধি করে দুর্নীতিকে কোটায় নামানো সম্ভব নয়। রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি রোধ করতে হলে এসব রাঘববোয়ালদের আগে থামাতে হবে তা না হলে কূপে বিড়াল রেখে বালতি বালতি পানি সেচনে কোনো লাভ হবে না।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228