উপজেলা পরিষদ নির্বাচন
কার্যকর হোক স্থানীয় সরকার
সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:৩০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৫, ২০১৯
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ পুরোপুরি না কাটতেই উপজেলা নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করলো নির্বাচন কমিশন। আগামী মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ধাপে ধাপে সারা দেশের উপজেলাগুলোতে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল ঘোষণার আনুষ্ঠানিকতা হবে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে বিগত ১৯৮২-১৯৯০ মেয়াদে ক্ষমতাসীন জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সামরিক সরকার প্রশাসনিক সংস্কার ও পুনর্গঠন কমিটির সুপারিশমালা অনুসরণে উপজেলা পরিষদ পদ্ধতি চালু করে। বস্তুতপক্ষে এ সুপারিশমালা ১৯৫৯ সালের মৌলিক গণতন্ত্র আদেশক্রমে গঠিত থানা উন্নয়ন ও সমন্বয় পরিষদের অনুবৃত্তিমূলক দলিল।
উপজেলা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তৃণমূলের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ক্ষমতাপ্রাপ্ত হবে বলে মনে করা হলেও সেটি হয়ে ওঠেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। বলা হচ্ছে, পরিষদ প্রতিনিধিদের ক্ষমতা খর্ব করে সংসদ সদস্য ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে সব ক্ষমতা বাটোয়ারা করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ প্রতিনিধিরা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন বা অন্য কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন। এতে ক্ষমতার প্রকৃত বিকেন্দ্রীকরণ তো ঘটেইনি বরং আমলাদের হাতেই ক্ষমতা কুক্ষিগত হয়েছে। আর তাদের ওপর ছায়া হয়ে থাকছেন সংসদ সদস্যরা।
তবে উপজেলা নির্বাচনে জনপ্রতিনিধিদের দাবি আমলে নিয়ে অতীতে সরকার বেশ কয়েকবার সংসদ সদস্য, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ অন্য প্রতিনিধিদের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনার আশ্বাস দিয়েছে। এবার উপজেলা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সে ভারসাম্য ফিরবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট অনেকে। এ জন্য এবার এ নির্বাচন নিয়ে বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিপুল আগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছে। অন্যদিকে, প্রধান বিরোধীপক্ষ বিএনপির মধ্যে এ নির্বাচন নিয়ে কোনো উৎসাহ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। তারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ত্রুটি-বিচ্যুতি কাটিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সংশোধিত রূপ দেখা যাবে কি না তা সময়ই বলে দেবে। আমরা আশা করব, নির্বাচনী আইন-কানুনের সীমাবদ্ধতা দূর করে এবং সেই সঙ্গে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষ আচরণের মধ্য দিয়ে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনের আয়োজনে নির্বাচন কমিশন তার অতীত ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠবে, সেটাও আমরা আশা করি। অন্যদিকে ক্ষমতার ভারসাম্য আনার জন্য স্থানীয় সরকারের আইনি কাঠামো সংস্কারও এখন সময়ের দাবি।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228