ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

পোশাক শ্রমিকদের সংশোধিত মজুরি

বাস্তবায়নে গড়িমসি কাম্য নয়

সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:৪৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৪, ২০১৯

মজুরি কাঠামো নিয়ে পোশাক শ্রমিকদের টানা বিক্ষোভের মুখে তাদের মজুরি কাঠামো শেষ পর্যন্ত সংশোধন করল সরকার। এতে কয়েকটি গ্রেডে মজুরি সমন্বয়ের পাশাপাশি মজুরি বৃদ্ধিও পেয়েছে। শ্রমিক বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে অবশেষে মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে মজুরি নিয়ে ন্যূনতম সমঝোতা তৈরি হলো। সংশোধিত মজুরি কাঠামোতে সাতটি গ্রেডের মধ্যে ৬টি গ্রেডেই বেড়েছে শ্রমিকদের মজুরি।

এ ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণ হলো, এ দেশে সোজা আঙ্গুলে ঘি ওঠে না, আন্দোলন-সংগ্রাম ছাড়া কোনো প্রাপ্যই আদায় করা যায় না। গত কয়েক দিনের আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে একজন শ্রমিকের প্রাণ গেছে, অনেকে আহত হয়েছেন। শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করায় সাধারণ মানুষকে বিস্তর দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এত কিছু হওয়ার পর তবেই পোশাক শ্রমিকদের বেতন কাঠামো সংশোধনের দাবি মেনে নেওয়া হলো। অথচ এ ব্যাপারে পোশাক শিল্পের মালিকরা যদি একগুঁয়ে অনমনীয় মনোভাব না দেখাতেন, তা হলে অনেক আগেই সবকিছু সহজে হয়ে যেত।

উল্লেখ্য, বিভিন্ন মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালেই পোশাক শ্রমিকদের বেতন বেড়েছে ৩০০ শতাংশেরও বেশি। কিন্তু তারপরও শ্রমিকরা যে তিমিরে সেই তিমিরেই রয়ে গেছেন। সংসার চালাতে তারা আগে যেমন বেগ পেতেন, দফায় দফায় বেতন বাড়ানোর পরও তাদের সে দুরবস্থা ঘোচেনি। কারণ মজুরি বাড়লেও তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আরও বেশি হারে পণ্যমূল্য বাড়ার ফলে বাড়তি মজুরি শ্রমিকদের অবস্থার ইতিবাচক কোনো পরিবর্তন ঘোচাতে পারে না।

বিদ্যমান শ্রম আইনানুযায়ী, পোশাক শিল্পে মুনাফার পাঁচ শতাংশ শ্রমিকদের দেওয়ার কথা। কিন্তু মালিকরা সেটা এখনো দিচ্ছেন না। বিগত মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার পোশাক শ্রমিকদের জন্য ডরমেটরি বানিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে বলে কথা দিয়েছিল। আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারেও তা উল্লেখ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে নামমাত্র দুই শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছিল। কিন্তু মালিকদের অসহযোগিতার কারণে এ সংক্রান্ত কার্যক্রমের আর কোনো অগ্রগতি হয়নি।

আমাদের মনে রাখতে হবে, বছরে ৩১০০ কোটি ডলারের রেডিমেট গার্মেন্ট খাত বাংলাদেশের প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের খাত। এ খাতের প্রাণ হলেন শ্রমিকরা। তারা বাঁচলেই এ শিল্প বাঁচবে। বলতে গেলে তাদের অসীম আত্মত্যাগের ওপরই এ শিল্পের ভিত গড়ে উঠেছে। অমানবিক শর্তে ও পরিবেশে কাজ করতে গিয়ে এ পর্যন্ত অসংখ্য পোশাক শ্রমিক প্রাণ বিসর্জনও দিয়েছে। আশা করি, শ্রমিকদের সংশোধিত বেতন কাঠামো বাস্তবায়নে পোশাক শিল্প মালিকরা এবার অহেতুক কালক্ষেপণ করবেন না। এ জন্য আবারও যেন শ্রমিকদের আন্দোলনে নামতে না হয়, এটাই কাম্য।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper