ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কন্যাশিশুর সুরক্ষা

নিশ্চিত করুন সর্বাগ্রে

সম্পাদকীয়-১
🕐 ১০:০৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১০, ২০১৯

বাংলাদেশে চলতি বছর শুরু হয়েছে নোয়াখালীতে গৃহবধূ ধর্ষণের ন্যক্কারজনক ঘটনার মধ্য দিয়ে। এর পর উপর্যুপরি কয়েকটি কন্যাশিশু ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা পুরো জাতিকে স্তম্ভিত করে দিয়েছে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, এসব ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে নিকটাত্মীয়রা। এ প্রসঙ্গে স্মরণ করা যেতে পারে জাতিসংঘের সাম্প্রতিক এক মন্তব্যের কথা, যেখানে বলা হয়েছে, নারী ও শিশুরা তাদের গৃহে ও পরিবারেই সবচেয়ে অনিরাপদ। বিশ্বায়নের প্রভাবে আমাদের সমাজজীবনে গত কয়েক দশকে মূল্যবোধের বিপুল অবক্ষয় ঘটেছে।

এ কারণে নারী ও শিশুদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। পরিণামে বাড়ছে ধর্ষণের ঘটনা। নানা শ্রেণি এবং বয়সের ব্যক্তিরা এটি করছে। শিশুদের ওপর বল খাটানো বা প্রভাবিত করা, ভয় দেখানো সহজ হয়। এ সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীরা।

শিশুদের ওপর নির্যাতন বাড়া কিংবা শিশু ধর্ষণ ও হত্যা বাড়ার কারণ হিসেবে অনেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতাকেও দায়ী করছেন। শিশুদের ভোগ্যপণ্য হিসেবে দেখার পেছনে অনেক ক্ষেত্রে পর্নোগ্রাফির প্রভাবও রয়েছে। দরিদ্র শ্রেণির কন্যাশিশুরা এ ধরনের ঘটনার শিকার বেশি হচ্ছে। শ্রমজীবী বাবা-মায়েদের অনুপস্থিতিতে এসব শিশুকে দেখার কেউ থাকে না। আরেকটি গ্রুপ, যারা নিজেরাই কর্মজীবী বা গৃহকর্মী, তারা ধর্ষণ, নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে বেশি।

অজ্ঞতা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে অনেকেই এ ধরনের অপরাধের অভিযোগ নিয়ে আদালত বা পুলিশের দোরগোড়া পর্যন্ত পৌঁছান না বা পৌঁছাতে পারেন না। ফলে এসব অপরাধ ঘটছেই। অনেকে শিশু বা অভিভাবকই জানে না কোথায় অভিযোগ জানাতে হয়। আবার অনেকে দেখছেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটছে, কিন্তু বিচার হচ্ছে না। অনেক সময় তথাকথিত সামাজিক সালিশে বাইরেই একটা মিটমাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি শক্তিশালী হয়ে উঠছে। অনেক দেশে কিন্তু দ্রুত বিচার আইনে সাজা হয় এবং মানুষ তা দেখে সচেতন হয়। ধর্ষণের মামলা চলাকালে বিভিন্ন বিব্রতকর পরিস্থিতি এবং বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা আইনের আশ্রয় নিতে অনীহা তৈরি করে, বলছেন শিশু অধিকার কর্মীরা। জামিন অযোগ্য অপরাধ হওয়ার পরও অনেক ক্ষেত্রে জামিন পেয়ে যাচ্ছে অভিযুক্তরা। অপরাধ করে সহজে জামিন পাওয়া গেলে হয়তো অপরাধের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। সুতরাং শিশু ধর্ষণের ব্যাপারে যদি আলাদা সেল করা হয়, মামলার গতি তদারকি করা হয়, তাহলে এ ধরনের অপরাধ অনেকটা কমতে পারে।

শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের মতো গর্হিত অপরাধ ঠেকাতে শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা বিচার ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে থাকলে চলবে না। গড়ে তুলতে হবে শক্ত সামাজিক প্রতিরোধ। সেই সঙ্গে সাংস্কৃতিক শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে মানুষের মন-মানসিকতায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনাটাও এখন সময়ের দাবি।

 

 

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper