আবারও শিশু ধর্ষণ ও হত্যা
সামাজিক প্রতিরোধ চাই
সম্পাদকীয়-২
🕐 ৯:১৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ০৮, ২০১৯
দেশে নারী ও শিশু ধর্ষণের হার আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই রাজধানীসহ দেশের নানা স্থানে নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর হত্যার মর্মান্তিক সব খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও সম্প্রচারিত হচ্ছে। গত শনিবার পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়ায় দুই বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর তিনতলা থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করার খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে সাতক্ষীরায় তৃতীয় শ্রেণির একজন ছাত্রীকে ধর্ষণের পর পুকুরের পানিতে ফেলে দিয়ে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ধরনের খবর স্বভাবতই আমাদের শঙ্কিত করে তোলে আমাদের সমাজে শিশু ও নারীর নিরাপত্তা এবং জনসাধারণের নৈতিক স্বাস্থ্যের ক্রমাবনতির ব্যাপারে। সম্প্রতি বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সদ্য বিগত ২০১৮ সালে সারা দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে মোট ৯৪২ জন নারী ও শিশু। এদের মধ্যে গণধর্ষিত হয়েছে ১৮২ জন। ধর্ষণের পর মেরে ফেলা হয়েছে ৬৩ জনকে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এসব তথ্য পানির তলায় ডুবে থাকা হিমশৈলের ডগামাত্র।
ঢাকার গেণ্ডারিয়ার ঘটনায় অভিযুক্তদের পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পেরেছে। কয়েক দিন আগে নোয়াখালীতে গৃহবধূকে গণধর্ষণের দায়ে অভিযুক্তদেরও পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু এ ধরনের জঘন্য অপরাধীদের শুধু গ্রেপ্তার করলেই চলবে না। এদের সর্বোচ্চ শাস্তিও নিশ্চিত করতে হবে। আইনের ফাঁকফোকর গলে তারা যেন কিছুতেই বেরিয়ে যেতে না পারে।
তবে এ ধরনের অপরাধ বন্ধের জন্য শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর নির্ভর করে বসে থাকলেও চলবে না। এ ধরনের অপরাধ বন্ধ করা ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে আইনি পদক্ষেপের পাশাপাশি দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সামাজিক প্রতিরোধও গড়ে তুলতে হবে। সেই সঙ্গে নারী-পুরুষের সমান অংশীদারিতায় নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের পরিমাণ বাড়াতে হবে, যাতে এ দুই পরিপূরক লিঙ্গের মধ্যে একটা সুস্থ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মনে রাখতে হবে, যত দিন পর্যন্ত আমরা আমাদের নারীদের নিরাপদ, অবাধ সঞ্চরণ নিশ্চিত করতে না পারব, তত দিন একটি সভ্য, সংস্কৃতবান জাতি হিসেবে আমাদের দাবি অর্থহীন বলেই প্রমাণিত হবে।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228