মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ
নতুন আশার সঞ্চার
সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:৫৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ০৭, ২০১৯
এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় পাওয়ার পর সবারই কামনা ছিল দলনেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতিশীল নতুনদের যেন মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসেন। তাদের সে আকাক্সক্ষা ষোলো আনার ওপর আঠারো আনা পূর্ণ হয়েছে বললে অত্যুক্তি হবে না। প্রধানমন্ত্রীসহ ৪৭ সদস্যের মন্ত্রিসভায় ৩২ জনই নতুন মুখ। তার মধ্যে ২৭ জন একেবারেই আনকোরা, যারা আগে কখনো কোনো মন্ত্রিসভায় ছিলেন না। সত্যি বলতে কী, নতুন মন্ত্রিসভায় এত নতুনত্বের চমক অতি বড় উচ্চাকাঙ্ক্ষীদের চিন্তায়ও ছিল না।
আগের মন্ত্রিসভার মাত্র ১৪ সদস্য এবারের মন্ত্রিসভায় স্থান পাচ্ছেন। ২৪ জন পূর্ণমন্ত্রীর মধ্যে ৯ জনই নতুন মুখ। বিদায়ী সরকারে না থাকলেও আগে মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করেছেন এমন তিনজনকে শেখ হাসিনা ফিরিয়ে এনেছেন পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে। গত সরকারের দুজন প্রতিমন্ত্রীর এবার পদোন্নতি হয়েছে। প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জনই নতুন মুখ। আরও তিন নতুন মুখ এসেছেন তিন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রীর দায়িত্বে।
গত মন্ত্রিসভার ৩৬ সদস্য এবার বাদ পড়ে গেছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন- আবুল মাল আবদুল মুহিত, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, শাজাহান খান, কামরুল ইসলাম, খোন্দকার মোশাররফ হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আসাদুজ্জামান নূরের মতো হেভিওয়েট আওয়ামী লীগ নেতারাও। শরিক দলের রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু প্রমুখ প্রবীণ নেতাও এবারের মন্ত্রিপরিষদে নেই।
গতবারের মন্ত্রিসভার পাঁচজন পূর্ণমন্ত্রী এবং দুজন টেকনোক্র্যাটমন্ত্রী এবারও মন্ত্রিসভায় থাকছেন। এরা হলেন- ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, আনিসুল হক, আ ক ম মোজাম্মেল হক, আ হ ম মুস্তফা কামাল, স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ও মোস্তাফা জব্বার। এদের মধ্যে শুধু মুস্তফা কামালের মন্ত্রণালয় বদল করে তাকে গুরুত্বপূর্ণ অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বাকিদের আগের মন্ত্রিসভার স্ব স্ব পদেই বহাল রাখা হয়েছে।
এবারের মন্ত্রিসভা গঠনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরেকটি বড় চমক দিয়েছেন শুধু নিজ দল আওয়ামী লীগ থেকে সব মন্ত্রী নিয়োগ করার মধ্য দিয়ে। মহাজোট গঠনের পর থেকে গত দুই মন্ত্রিসভায় শরিক দল থেকে মন্ত্রী নিয়োগের যে-নীতি তিনি অনুসরণ করছিলেন, এবার তা থেকে সরে এসেছেন। বাস্তব অভিজ্ঞতার নিরিখে বলা যায়, এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনরায় পেয়েছে, তার ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী শুধু এ দল থেকেই মন্ত্রী নিয়োগ করে ঠিক কাজটাই করেছেন বলে মনে হচ্ছে। জনসমর্থনহীন শরিক দলগুলো নিয়ে মন্ত্রিসভার বোঝা বাড়ানোটা হয়তো ঠিক হতো না।
নিজের দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞার আলোকে প্রধানমন্ত্রী নতুন যে-মন্ত্রিসভা গঠন করলেন, তারুণ্য ও নতুনত্বের প্রতিভাসে তা ইতোমধ্যেই গণমানুষের ইতিবাচক মনোভাব আকর্ষণ করতে পেরেছে। এখন আমাদের প্রতীক্ষা, এ মন্ত্রিসভা জাতির আশা-আকাক্সক্ষার কতটুকু বাস্তব প্রতিফলন ঘটাতে পারে তা দেখার।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228