শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস
জাতীয় ইতিহাসে বেদনাঘন দিন
সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:০৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৮
আজ ১৪ ডিসেম্বর। স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ হিসেবে দিনটি চিহ্নিত হয়ে আছে। জাতির ইতিহাসে এ এক তীব্র বেদনাময় দিন। ১৯৭১-এর এ দিনে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দালাল-দোসররা বেছে বেছে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, দার্শনিক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্মম-নৃশংসভাবে হত্যা করে।
একাত্তরের ডিসেম্বরে মুক্তিযুদ্ধ যখন শেষ হওয়ার পথে, পাকবাহিনী তখন বুঝে গিয়েছিল তাদের পরাজয় অবধারিত। শেষ কামড় হিসেবে তারা বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার এক ঘৃণ্য নীলনকশা তৈরি করে এবং এরই অংশ হিসেবে এ দেশীয় দালাল-দোসর রাজাকার-আলবদর বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় দেশের অগ্রণী সূর্যসন্তানদের হত্যা করে।
ঘৃণ্য এই গণহত্যাকাণ্ডের দুদিন পর ১৬ ডিসেম্বর পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্যে দিয়ে দেশ স্বাধীন হলে, রাজধানীর মিরপুর, রায়ের বাজার প্রভৃতি এলাকার বধ্যভূমিতে খুঁজে পাওয়া যায় নিহত বুদ্ধিজীবীদের ক্ষতবিক্ষত লাশ। এসব লাশের অধিকাংশের ছিল চোখ ও হাত-পা বাঁধা, কোনো কোনো লাশ ছিল একাধিক গুলিবিদ্ধ, অনেককে হত্যা করা হয়েছিল ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে। হত্যার আগে তাদের ওপর যে নৃশংস অত্যাচার চালানো হয়েছে, তার সুস্পষ্ট সাক্ষ্য বহন করছিল তাদের শরীরের ক্ষতচিহ্নগুলো। কিছু কিছু লাশ এতটাই ক্ষতবিক্ষত ছিল, তাদের পরিবার-পরিজনকে পর্যন্ত মৃতদেহগুলো শনাক্ত করতে প্রচুর বেগ পেতে হয়েছে।
সদ্য স্বাধীন জাতি এ ঘটনায় বিস্ময়ে, শোকে ও বেদনায় স্তম্ভিত হয়ে যায়। পাকিস্তানিদের এই ন্যক্কারজনক নীলনকশার স্বরূপ প্রকাশে তীব্র নাড়া খায় বিশ্ববিবেকও।
জাতি প্রতিবছর দিনটিকে স্মরণ করে অশ্রু ও ফুলের অর্ঘ্য দিয়ে। ১৬ ডিসেম্বরের মহাবিজয়ের স্মরণোৎসবে মেতে ওঠার দুদিন আগে এ দিনটি আমাদের আবারও মনে করিয়ে দেয় স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে জাতিকে যে বিশাল মূল্য দিতে হয়েছে, তার কথা। আমাদের জাতীয় পতাকার সবুজ জমিনের মাঝখানের লাল বলয়টিতে জমাট বেঁধে আছে দেশজননীর কত শহীদ সন্তানের বুকের রক্ত, তার কথা।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228