মনোনয়ন ও নির্বাচনী ইশতেহার
তরুণ ও নারীদের গুরুত্ব দিন
সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:৩৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৮
দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এবং তাদের নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত দলগুলোর শীর্ষনেতারাও তাদের বক্তব্যে-ভাষণে প্রায়শই এমন ইচ্ছে ব্যক্ত করেন, তরুণরা রাজনীতিতে এগিয়ে আসুক, যাতে তারা প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও অভিজ্ঞতায় পরিপক্ব হয়ে আগামী দিনে রাজনীতি তথা সরকারের হাল ধরতে পারে। কিন্তু এবারের নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের সে ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে, এমনটা বলা যাবে না। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রায় সাড়ে চারশ প্রার্থীর মধ্যে পঞ্চাশটি নতুন বা তরুণ মুখও খুঁজে পাওয়া যাবে না। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই জোটেই পুরনো মুখেরই জয়জয়কার। মনে হয়, মুখে তারা যা-ই বলুক, কার্যত তারা সবাই পুরনো চাল ভাতে বাড়ার আপ্তবাক্যেই বিশ্বাসী।
এ ক্ষেত্রে একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, এবারের ভোটার তালিকায় ২২ শতাংশেরই বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। এদের বেশিরভাগেরই আগেকার কোনো নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা নেই। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ ২২ শতাংশ ভোটারের অধিকাংশই রাজনীতিবিমুখ, দেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নেতিবাচক পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে। দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বে দীর্ঘকাল ধরে আসীন পুরনো মুখগুলোর ওপরও এদের খুব একটা আস্থা বা ভক্তিশ্রদ্ধা আছে, এমন কথা জোর গলায় বলা যাবে না। এদের সমর্থন ভোটবাক্সে টেনে আনতে হয়তো তেমন স্বপ্নবাজ তরুণ নেতৃত্বেরই প্রয়োজন ছিল, যারা রাজনীতিতে আরও ইতিবাচক ধারার, অবাধ তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর নতুন ধরনের রাজনৈতিক যুগের সূচনা করতে পারবেন।
‘খোলা কাগজ’কে দেওয়া কিছু তরুণ ভোটারের সাক্ষাৎকারে তাদের এ ধরনের মনোভাবই ব্যক্ত হয়েছে। তারা বলেছেন, সেকেলে ধ্যানধারণার পুরনো নেতারা, যারা পেশিশক্তির ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় যেতে চান, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতি প্রতিহিংসামূলক আচরণ প্রদর্শন করেন, বক্তৃতা-বিবৃতিতে অনর্গল মিথ্যা বলেন, তেমন প্রার্থীকে তারা ভোট দেবেন না।
অন্যদিকে, অচিরেই প্রকাশিতব্য বিভিন্ন দলের নির্বাচনী ইশতেহারে নারীর ক্ষমতায়নের ওপর বিস্তারিত আলোকপাত করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন দেশের বিশিষ্ট কয়েকজন নারী ব্যক্তিত্ব। নারী ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ খানিকটা এগিয়ে গেলেও, তা কাক্সিক্ষত মাত্রার নয় বলেই ‘খোলা কাগজ’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। নারীর ক্ষমতায়নের অপরিহার্য পূর্বশর্ত হিসেবে সমাজে নারীর নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও তাদের প্রতি সহিংসতা কমানো, শিক্ষায় ও কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষ বৈষম্য হ্রাস প্রভৃতির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন তারা।
দেশের জনসংখ্যার প্রায় অর্র্ধেক হিসাবে ভোটার সংখ্যার অর্ধেকও নারী, এটা পরিসংখ্যান না দেখেও বলে দেওয়া যায়। নারীদের ভোট টানার জন্যে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে নারী স্বার্থের প্রতিফলন ঘটাবে, এমনটাই আমাদের কাম্য। এবারের নির্বাচনী ইশতেহার ও নির্বাচন যেন এমন হয়, যাতে নারী ও তরুণ সমাজ ফিরে পায় রাজনীতি ও সুশাসনে তাদের হারানো আস্থা ও বিশ্বাস।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228