ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নতুন করে বাংলাদেশে ঢুকছে রোহিঙ্গারা

নিপীড়িত জনস্রোত বন্ধ হবে কবে

সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:৪৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৮

মাসখানেক আগে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় কয়েক হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে প্রত্যাবাসনের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রত্যাবাসনের বিরুদ্ধে তাদের প্রবল প্রতিবাদ বিক্ষোভের মুখে সে চেষ্টা ভেস্তে যায়। রোহিঙ্গাদের জোর করে যাতে তাদের মাতৃভূমিতে ফেরত পাঠানো না হয়, এ ব্যাপারে জাতিসংঘেরও নির্দেশনা রয়েছে।

শরণার্থী শিবিরগুলোতে ইতোমধ্যেই পালিয়ে আসা কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে বাংলাদেশ যখন ব্যতিব্যস্ত, সারা বিশ্বের নজর যখন এদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের দিকে নিবদ্ধ, তখন আবার নতুন করে দলে দলে রোহিঙ্গা নৌকায় নাফ নদী পেরিয়ে টেকনাফ কক্সবাজারে ঢুকে পড়ছে বলে জানা গেছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক মহলের ব্যাপক প্রতিবাদ-নিন্দাবাদ সত্ত্বেও সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর অত্যাচার ও সহিংসতা এখনো অব্যাহত রয়েছে। বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ায় উদ্বাস্তু হয়ে পড়া লক্ষাধিক রোহিঙ্গা, যারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে পারেনি, আন্তর্জাতিক চাপের মুখে তাদের রাখাইন রাজ্যেই কিছু শিবিরে নিয়ে গিয়ে তোলা হয়েছে। আবার অনেকে আগের মতোই পালিয়ে আসছে তাদের শেষ ভরসাস্থল বাংলাদেশে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানা যায়, রাখাইনে খোলা রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরগুলোর পরিবেশ অত্যন্ত ঘিঞ্জি, অপরিচ্ছন্ন ও অস্বাস্থ্যকর। হাজারো রোহিঙ্গা এসব ক্যাম্পে মানবেতরভাবে গাদাগাদি করে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে। অথচ মিয়ানমারের সু চি সরকার বলছে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের শ্রমিক হিসেবে উন্নয়ন কাজে লাগিয়ে পুনর্বাসিত করার মধ্য দিয়ে শিবিরগুলো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

কিন্তু বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের এ পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় তাদের পুরনো বসতভূমিতে ফিরিয়ে নিয়ে না গিয়ে আশ্রয়শিবিরেরই আশপাশে স্থায়ী বসতি বানিয়ে সেখানে কঠিন নজরদারির মধ্যে রাখা হচ্ছে। এসব স্থায়ী বসতির পরিবেশও আশ্রয়শিবিরগুলোর তুলনায় কিছুমাত্র উন্নত নয়। এখানকার বাসিন্দাদের থাকতে হয় সার্বক্ষণিক বিশাল নজরদারি চৌকির নেটওয়ার্কের আওতায় আর উগ্র বৌদ্ধদের সহিংসতার শঙ্কার মধ্যে। এ মানবেতর অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে রোহিঙ্গাদের অনেকে মরিয়া হয়ে এখনো পালিয়ে আসছে বাংলাদেশে, মালয়েশিয়ায় বা ভারতে।

আমরা চাই মানবতার দিকটি সুবিবেচনায় এনে মহামানব বুদ্ধের অনুসারী দেশটির দ্রুত শুভবুদ্ধিও পুনরোদয় হোক। ধর্মীয় নির্দেশনা মেনেই তারা রোহিঙ্গাদের দিকে মৈত্রী ও করুণার হাত সম্প্রসারিত করুক। শত শত বছরের ঐতিহ্য অনুসরণে সংখ্যাগুরু বৌদ্ধ ও সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা পাশাপাশি সহাবস্থান করুক শান্তি ও প্রীতির বাতাবরণে। বাংলাদেশও মুক্তি পাক এক বিশালসংখ্যক অসহায় আশ্রয়প্রার্থীর অনাকাঙ্ক্ষিত দায়দায়িত্বের অসহনীয় চাপ থেকে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper