ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ডলারের দামে অস্থিরতা, সমাধান কোন পথে

সম্পাদকীয় ডেস্ক
🕐 ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ, মে ১৮, ২০২২

ডলারের দামে অস্থিরতা, সমাধান কোন পথে

বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্য, জ্বালানি ও কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বেড়েছে আমদানি ব্যয়। ফলে আমদানিনির্ভর দেশগুলোতে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে সৃষ্টি হয়েছে অস্থিরতা। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে মার্কিন ডলারের দাম। ফলে মার্কিন ডলারের বিপরীতে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল হয়েছে এসব দেশের স্থানীয় মুদ্রার মান।

পার্থক্য বেড়েছে ব্যাংকের আন্তঃবাজার এবং খোলা বাজারে মুদ্রার বিনিময় হারে। কয়েকটি দেশে সংকট সৃষ্টি হয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার। এসব দেশে মূল্যস্ফীতি ঠেকেছে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি করে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এতেও স্বাভাবিক হচ্ছে না মুদ্রা বাজার। ফলে ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার মান সমন্বয়ের পরামর্শ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা।

বাংলাদেশে ডলারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমেই চলেছে। দেশের বাজারে বেশ কিছু দিন ধরে মার্কিন ডলারের দামে অস্থিরতা বিরাজ করছে। প্রতিদিনই বাড়ছে এর দাম। কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে ডলারের দাম গতকাল মঙ্গলবার ১০০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। গেলদিন রাজধানীর ব্যাংকপাড়া মতিঝিল, পল্টন ও বায়তুল মোকাররম এলাকায় খোঁজ নিয়ে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যাংকার ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজার স্বাভাবিক রাখতে ডলার খোলা বাজারে ছাড়ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সক্ষমতাও কমে যাচ্ছে। সামনের দিকগুলোতে এভাবে ডলার বাজারে ছাড়তে পারবে না। ব্যবসায়ীদের শঙ্কা, ডলারের ভয়াবহ সংকটের দিকে যেতে পারে দেশ। ডলারের বিপরীতে টাকার এ দরপতনে আমদানি খাতে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। ফলে বাড়ছে পণ্যমূল্য। কোনো কোনো ব্যাংক ডলারের ঘাটতির কারণে এলসি পর্যন্ত খুলতে পারছে না। আন্তব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বেশি দামে কেউ কেউ ধার করছে ডলার।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমদানির গতি প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। সেই তুলনায় বাড়েনি রপ্তানি আয়। আবার প্রবাসী আয় কমেছে। এ কারণে মার্কিন ডলারের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। তাতে দেশে ডলারের বিনিময় মূল্য বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে অন্যান্য মুদ্রার ওপরও। বৈদেশিক মুদ্রার সংকট কাটাতে এখনই বাস্তবায়ন জরুরি নয়, এমন সব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। অর্থনীতিবিদরা জানান, অপ্রয়োজনীয় ও কম প্রয়োজনীয় পণ্য এবং বিলাসী পণ্য আমদানিতে নিরুৎসাহিত করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক মার্জিন বাড়িয়েছে, এর বাইরে প্রয়োজনে শুল্ক বাড়ানো দরকার এসব পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করতে।

সামগ্রিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে কমন কারণ হচ্ছে-অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা। ফলে শ্রীলঙ্কা চরম খারাপের মধ্যে, পাকিস্তানও একই দিকে যাচ্ছে, বাংলাদেশেও উদ্বেগের জায়গায় আছে, যদি সময়মত পদক্ষেপগুলো নেওয়া যায় তবে ওইসব দেশের মতো হওয়ার সম্ভবনা নেই। কারণ বিগত এক দশক ধরে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা অন্যান্য দেশের তুলনায় ভালো রেখেছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও ভারতের এ অর্থনৈতিক সংকট শুধু এ দেশগুলোতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এ ক্ষেত্রে সমগ্র অঞ্চলে অর্থনৈতিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এলসি খোলার ক্ষেত্রে ব্যাংকারদের সতর্ক থাকতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারি বাড়াতে হবে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper