‘ছুটির আগে বেতন দেওয়ার সিদ্ধান্ত’
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৯:৩৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১১, ২০২২
পোশাক কারখানার কর্মীসহ সব প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের ২০ রোজার মধ্যে বোনাস এবং ঈদের ছুটির আগে এপ্রিল মাসের প্রথম ১৫ দিনের বেতন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর বিজয় নগরের শ্রম ভবনে ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন-বোনাসের বিষয়ে ত্রিপক্ষীয় পর্ষদ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভা শেষে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান সাংবাদিকদের বলেন, নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে রমজানের ঈদ উদযাপন করতে চাই। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর নেতারা রয়েছেন, আপনাদেরসহ মালিকদের বলছি, সুন্দরভাবে ঈদ উপভোগ করতে সরকারিভাবে ঈদের ছুটির আগে শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন, এপ্রিলের ন্যূনতম ১৫ দিনের বেতন ও বোনাস দিতে হবে। এছাড়া সব বকেয়া ঈদের আগে পরিশোধের নির্দেশ দেন তিনি।
এর আগে সভায় অংশ নিয়ে শ্রমিক নেতারা দাবি করেন, ২০ রোজার মধ্যে বোনাস এবং অন্যান্য বকেয়া পরিশোধের পাশাপাশি এপ্রিল মাসের ন্যূনতম প্রথম ১৫ দিনের বেতন দিতে হবে। এছাড়া ঈদের ছুটি নির্ধারণ করে এলাকা ভিত্তিক পর্যায়ক্রমে গার্মেন্টস ছুটি দেওয়ার দাবি করা হয়।
সভা পরিচালনা করেন শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব এহসান-ই-এলাহী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন— শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মাহমুদ, বিজিএমইএ সহ-সভাপতি নাসির হোসেন, বিকেএমইএ’র প্রতিনিধি ফারজানা শামীমা, শ্রমিক নেতা সুলতান আহমেদ, ফিরোজ হোসাইন, নাজমা আক্তার, নয়মুর হাসান জুয়েল, সড়ক-মহাসড়ক বিভাগের প্রতিনিধি সুলতানা নাসরিন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা।
তার কথার সঙ্গে একমত পোষণ করে শ্রমিক নেতা সিরাজুল ইসলাম বলেন, কাজের চাপের কারণে বছরের অন্যান্য সময় শ্রমিকরা ছুটি পায় না। তাই ঈদের আনন্দ স্বজনদের সঙ্গে উপভোগ করতে একটু বেশি ছুটি চান তারা। ফলে ছুটির বিষয়টি স্পষ্ট করতে হবে। তা না হলে ছুটির বিষয় নিয়ে আন্দোলনসহ বিভিন্ন সমস্যা হয়। এটা সমাধানে ঈদের ছুটি পর্যায়ক্রমে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এই শ্রমিক নেতা বলেন, সব গার্মেন্টসে এক সঙ্গে ছুটি না দিয়ে এলাকা ভিত্তিক ছুটি দিলে ঈদের সময় একদিকে পরিবহন ভাড়া বাড়বে না। অন্যদিকে শ্রমিকদের ভোগান্তি কম হবে।
শ্রমিক নেতা রাশেদুল হক রাজু বলেন, নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় তা শ্রমিকের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। টিসিবির মাধ্যমে শ্রমিকদের পণ্য দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। একইসঙ্গে ঈদে বাস ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হবে। ঈদের সময় কারখানা ছুটি হলেই ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়া হয়, এতে কষ্ট হয় শ্রমিকের। এছাড়া শ্রমিক নেতারা ন্যূনতম বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবি তুলে ধরেন মন্ত্রীর কাছে।
সবার কথা শুনে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, সম্ভবত ২৮ এপ্রিল শ্রমিকদের শেষ কর্মদিবস। এরপর থেকে সরকারি ছুটি। সরকারি ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করে কারখানা মালিকরাও কারখানা বন্ধ ঘোষণা করবে। সরকারি ছুটি শুরুর আগেই বোনাস, মার্চ মাসের বেতন, বকেয়া ও চলতি মাসের ১৫ দিনের বেতন দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, জরুরি প্রয়োজনে রপ্তানি থাকলে সেক্ষেত্রে কারখানা খোলা রাখতে পারবেন, সেটা হবে রাষ্ট্রের স্বার্থে, অর্থনীতির স্বার্থে।
শ্রমিকদের নির্বিঘ্নে বাড়ি পৌঁছাতে সব ধরনের উদ্যোগ নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, কেউ যাতে অবৈধভাবে শ্রমিকদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া না নিতে পারে, তাদের হয়রানি করতে না পারে সেজন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।