ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

অন্তর্দ্বন্দ্বে জর্জরিত রিহ্যাব

এক দশক পর বইছে ভোটের হাওয়া

সিলেকশনের বদলে এবার হচ্ছে ভোট, ভোটের মাঠে নেই বড় ব্যবসায়ীরা, ক্রেতাদের অভিযোগ শোনার নেই কেউ

সাজেদ রোমেল
🕐 ৯:০৬ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২১

এক দশক পর বইছে ভোটের হাওয়া

আবাসন খাতের সহস্র ব্যবসায়ীর সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) এক দশক পর এবার ভোট হতে যাচ্ছে। প্রভাবশালী এই সংগঠনের ঘরে বসে নেতা নির্বাচনের বদলে এবার সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব ঠিক হবে। খোলা কাগজের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণেই এবার ‘বোঝাপড়া’র কমিটির বদলে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ এ সংগঠনের নির্বাচনে এবারও মাঠে নেই এ খাতের বড় ব্যবসায়ীরা।

আবাসন ব্যবসায়ীদের অন্তর্দ্বন্দ্ব চরমে

রাজনৈতিক মতাদর্শ, অর্থনৈতিক অনিয়ম এবং প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা থেকেই রিহ্যাব নেতাদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব শুরু হয়। অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ, বিদ্রোহীদের বহিষ্কারের ঘটনায় সেই দ্বন্দ্ব চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। আবাসন খাতের ক্রেতাদের অভিযোগ শুনে যাদের মীমাংসা করার কথা, তারা নিজেরাই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন।

সিলেকশনের বদলে এবার হচ্ছে ভোট

বর্তমান রিহ্যাবের কমিটি সভাপতি শামসুল আলামিন কাজলের নেতৃত্বে রয়েছে। অন্তর্কোন্দলের জের ধরে রিহ্যাবের ৯ জনকে কারণ দর্শাও নোটিস দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে পরে চারজনকে বহিষ্কার করা হয় সংগঠন থেকে। এই চারজনের একজনের বিরুদ্ধে আনা বহিষ্কারাদেশ পরে প্রত্যাহার করা হয়। এমন প্রেক্ষাপটে রিহ্যাবের ভেতরে দুটি শক্তিশালী উপদল তৈরি হয়। শামসুল আলামিন কাজলের রিহ্যাবের বর্তমান কমিটির নেতারা আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। বিরোধী পক্ষে নির্বাচনে নামছেন রবিউল, ওয়াহিদুজ্জামান এবং শামিম রেজার নেতৃত্বাধীন অংশটি। এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপ আসন্ন নির্বাচনের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। এই দুই পক্ষ আগামী ১০ নভেম্বর ২৭ পদে প্রতিদ্বন্দ্বী করবেন। রিহ্যাবের বর্তমান নেতৃত্বের পক্ষে আজমল হোসেন ও সোহেল রানা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। অন্যদিকে বিরোধীপক্ষে মাঠে কাজ শুরু করে দিয়েছেন বহিষ্কৃত তিন সদস্য সাইদুল ইসলাম বাদল, অবসরপ্রাপ্ত কমোডর শহিদ, দিপ্তি শামিম। বিদ্রোহী নেতাদের অন্যতম আইয়ুব আলী রয়েছেন। তাকে বহিষ্কার করে পরে আদেশ প্রত্যাহারের পর তিনি বিদ্রোহীদের সংগঠিত করছেন।

ভোটের মাঠে নেই বড় ব্যবসায়ীরা

হাজার সদস্যের সংগঠন রিহ্যাবের নির্বাচনে বড় কোনো ব্যবসায়ী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। একজন প্রেসিডেন্ট, একজন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, তিনজন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং অন্যান্য পরিচালকসহ ২৭ জনের কমিটিতে কোনো নামকরা হাউজিং উদ্যোক্তা থাকছেন না। তাতে যারা জমি বা ফ্ল্যাট কিনে বিপাকে পড়েন, তাদের অভিযোগ শুনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার মতো প্রভাবশালী কেউ না থাকলে সংগঠনটি কতটুকু ক্রেতাবান্ধব হবে, তা নিয়ে এবারও সংশয় থেকেই যাচ্ছে।

উৎসবমুখর আমেজে আবসান ব্যবসায়ীরা

এক দশক পর প্রথমে নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হয় এ বছর। তবে করোনার কারণে সে নির্বাচন স্থগিত করতে হয়। কদিন আগে রিহ্যাব নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার এনায়েতুর রহমান ভোটের তফসিল ঘোষণা করেন। ১০ নভেম্বর আসন্ন নির্বাচন ঘিরে আবাসিক ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে।

রিহ্যাব সদস্য ২০০৮ সালে নির্বাচিত রিহ্যাব নেতা নাসির উদ্দিন খোলা কাগজকে বলেন, এতোদিন সিলেকশনে কমিটি হয়েছে। এভাবে নেতৃত্ব নির্বাচন হলে এক ধরনের স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী তৈরি হয়। এবার ভোটের ঘোষণা আসলেই উৎসবে আমেজ তৈরি হয়েছে।

রিহ্যাবের বর্তমান প্রেসিডেন্ট শামসুল আলামিন কাজল সিলেকশনে দায়িত্ব পেয়েছেন, কবে সবশেষ ভোটে কমিটি হয়েছিল এই নেতার মনে নেই। তিনি খোলা কাগজকে বলেন, এখনো আমি নির্বাচন করবো কিনা মনস্থির করিনি। আমি অনেক বছর দায়িত্ব পালন করছি প্রেসিডেন্টের। পুরো কমিটি সিলেকশনে হয়েছে বারবার। এ মুহূর্তে আমার শেষ কবে সরাসরি ভোটে নির্বাচন হয়েছিল।

রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন। আমি তার সফরসঙ্গী হয়েছি বলে ভোটের খবর রাখতে পারছি না, ভোটে দাঁড়ানোও আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

 
Electronic Paper