ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আবারও ই-ভ্যালির কথা-কাজে অমিল

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
🕐 ১১:৪৯ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৮, ২০২১

আবারও ই-ভ্যালির কথা-কাজে অমিল

আবারও ঘোষণার সঙ্গে বাস্তবতার মিল পাওয়া যাচ্ছে না ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-ভ্যালি ডটকমের। অফারকৃত পণ্যে অগ্রিম না নেওয়ার কথা থাকলেও নেওয়া হচ্ছে। পণ্য ডেলিভারি দিয়ে পণ্যমূল্য নেওয়ার কথা থাকলেও ক্যুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠিয়ে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে। পণ্য ডেলিভারি সেবা নতুন নীতিমালা অনুযায়ী করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও বাস্তবে মিল পাওয়া যাচ্ছে না।

ই-ভ্যালির সাইটে ক্যাশ অ্যান্ড ডেলিভারিতে কোনো পণ্য পৌঁছে দিয়ে মূল্য নেওয়ার কথা বলা হলেও অর্ডার করে গ্রাহকরা বিপাকে পড়ছেন। নতুন এমন অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। গ্রাহকদের অভিযোগ, অফার অনুযায়ী পণ্য অর্ডার করার সময় ১০ শতাংশ টাকা নেওয়া হচ্ছে।

আবার পণ্য হোম ডেলিভারির কথা থাকলে পাঠানো হচ্ছে কুরিয়ার সার্ভিসে। এজন্য চার্জ কাটা হচ্ছে। আবার পণ্য গ্রাহকের বাসায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে না। পণ্য সরবরাহ নিতে হচ্ছে ক্যুরিয়ার সার্ভিসের সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে।

বিষয়টি নিয়ে ই-ভ্যালির কাস্টমার সার্ভিসে যোগাযোগ করা হলে সেখান থেকে জানানো হয় তাদের এটা জানা নেই। এমনকি পণ্যের দামের অগ্রিম ১০ শতাংশ নেওয়া হলেও তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে সেলার প্রতিষ্ঠান ডকুমেন্টের মাধ্যমে ওই অগ্রিম গ্রহণ করছে।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলে ই-ভ্যালির ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি। গ্রাহকদের প্রশ্ন, তাহলে ই-ভ্যালির মধ্যে অন্য কোনো দ্বিতীয় পক্ষ তৈরি হয়েছে যারা এই অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে? যা জানার পরও ই-ভ্যালি না জানার ভান করছে।

ই-ভ্যালির অনিয়ম, গ্রাহকের কাছে থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করা, মাসের পর মাস ঘোরানো এবং প্রায় ৩৩৮ কোটি টাকার অধিক গড়মিলের পর নড়ে চড়ে বসে সরকার। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয় বাংলাদেশ ব্যাংককে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে আর্থিক অনিয়ম উঠে আসে। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, দুর্র্নীতি দমন কমিশন (দুদক), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠায়।

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক চিঠিতে বলেছে, ই-ভ্যালি ডটকমের চলতি সম্পদ দিয়ে মাত্র ১৬ দশমিক ১৪ শতাংশ গ্রাহকের পণ্য সরবরাহ করতে পারবে বা অর্থ ফেরত দিতে পারবে। বাকি গ্রাহক এবং মার্চেন্টের পাওনা পরিশোধ করা ওই প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব নয়। এ ছাড়া গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছ থেকে নেওয়া ৩৩৮.৬২ কোটি টাকার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না, যা আত্মসাৎ কিংবা অবৈধভাবে অন্যত্র সরিয়ে ফেলার আশঙ্কা রয়েছে।

গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছ থেকে আগাম নেওয়া ৩৩৮ কোটি টাকা অবৈধভাবে সরিয়ে ফেলার আশঙ্কায় এই ই-কমার্স কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে গত ৪ জুলাই এ চিঠি দেওয়া হয়। দুদক তদন্ত নামে ই-ভ্যালির বিরুদ্ধে। এরপরই ই-কমার্সকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নীতিমালা তৈরি হয়। নতুন নীতিমালাতে পণ্য সরবরাহ দেওয়ার জন্য অগ্রিম টাকা নেওয়ার পর মাসের পর মাস ঘোরানোর সুযোগ বন্ধ হয়। এরপরই ইভ্যালি অন্য অন ডেলিভারিসহ নানা ধরনের অফার করতে থাকে। কিন্তু সেখানেও এ ধরনের অভিযোগ আসছে।

 
Electronic Paper