যেখানেই টিসিবির পণ্য সেখানেই লোকারণ্য
ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা, খালি হাতে ফিরছেন কেউ কেউ
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:৪৫ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২০, ২০২১
করোনায় টিসিবির পণ্যের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজার মূল্যের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম দামে ওএমএসের চাল, আটা এবং টিসিবির চিনি, ডাল ও তেল কেনার জন্য প্রতিদিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য মানুষ ভিড় করছেন। যেখানেই ওএমএস ও টিসিবির পণ্য মিলছে সেখানেই লোক ভিড় করছেন। রোদে পুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে পণ্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে ওএমএস ও টিসিবির ডিলাররা বলছেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় প্রতিদিন লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকে পণ্য না নিয়েই ফিরে যাচ্ছেন। আর সাধারণ মানুষ বলছেন, করোনাকালে ওএমএস ও টিসিবির পণ্য তাদের খুবই উপকারে আসছে। বিশেষ করে করোনার উচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যুঝুঁকি এড়াতে গত ১ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত টানা লকডাউন চলাকালে অনেক দরিদ্র মানুষের আয়-রোজগার প্রায় বন্ধ থাকে। এমতাবস্থায় ওএমএস ও টিসিবির অপেক্ষাকৃত কম দামের পণ্য তাদের দুবেলা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে।
সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন পয়েন্টে ডিলাররা ওএমএস ও টিসিবির পণ্য বিক্রি করছেন। পণ্যবাহী ট্রাকগুলো সাধারণত বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে আসলেও পণ্য কিনতে ভোর থেকেই অপেক্ষা করেন ক্রেতারা। খালি রাস্তায় কেউ ইট বিছিয়ে, কেউ ছালার বস্তা রেখে সিরিয়াল দেন। বিভিন্ন পয়েন্টে দীর্ঘ সিরিয়ালে নারী ও পুরুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ওএমএসের প্রতি কেজি চাল ৩০টাকা ও আটা প্রতি কেজি ২৩ টাকা (জনপ্রতি সর্বোচ্চ ৫ কেজি) এবং টিসিবির ট্রাকে কেজিপ্রতি ৫৫ টাকা দরে চিনি, ডাল এবং লিটারপ্রতি ১০০ টাকা দরে সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে।
গত রোববার দুপুর আনুমানিক ১টায় আজিমপুর ছাপড়া মসজিদের অদূরে রাস্তায় প্রখর রোদে দাঁড়িয়ে অসংখ্য নারী ও পুরুষকে ওএমএস ও টিসিবির পণ্য কিনতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধা ও শিশু কোলে গৃহবধূকেও দেখা যায়। কামরাঙ্গীরচরের ৭০ বছরের বৃদ্ধা শামসুন্নাহার জানান, সকাল ১০টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে দুপুর ১টার সময় ওএমএসের চাল ও আটা পেয়েছেন। ট্রাক দেরিতে আসা এবং লম্বা সিরিয়ালের কারণে ১০টায় এসেও পণ্য পেতে দেরি হয়েছে বলে জানান তিনি।
শম্পা নামের এক গৃহবধূ জানান, তার স্বামী নিউমার্কেটে একটি দোকানে চাকরি করেন। লকডাউনের কারণে বেতন পাননি। আগের জমানো টাকা থেকে সংসার চালাচ্ছেন। কমদামে পণ্য কিনতে তিনি আট মাসের শিশু সন্তানকে নিয়ে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। দামে একটু সস্তা হওয়ায় এসব পণ্যে দরিদ্রদের উপকার হচ্ছে বলে জানান তিনি।