ফারমার্স ব্যাংক সংকট ,রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক কিনবে ৭১৫ কোটি টাকার শেয়ার
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৭:২৬ পূর্বাহ্ণ, মে ০৯, ২০১৮
নানা অনিয়ম আর দুর্নীতিতে ডুবতে বসা ফারমার্স ব্যাংকের শেয়ার কিনতে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের আইনি বাধা আর রইল না।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির তার ক্ষমতাবলে দেওয়া এক আদেশে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশ্লিষ্ট তিনটি ধারা পরিপালন থেকে ব্যাংক চারটিকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
এর ফলে বেসরকারি এই ব্যাংকটিকে বাঁচাতে ৭১৫ কোটি টাকার শেয়ার কিনবে রাষ্ট্রায়ত্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। সংশ্লিষ্টরা জানান, সোনালী, জনতা, অগ্রণী এবং রূপালী ব্যাংকের প্রত্যেকে ১৬৫ কোটি টাকা করে মোট ৬৬০ কোটি টাকার শেয়ার কিনবে। বাকি ৫৫ কোটি টাকার শেয়ার কিনবে রাষ্ট্রায়ত্ত আর্থিক সংস্থা ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)।
সরকারি উদ্যোগের অংশ হিসেবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ফারমার্স ব্যাংকের শেয়ার কিনছে। এ উদ্যোগের বিরোধিতা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সংসদে আলোচনায়ও জনগণের অর্থ বেসরকারি ব্যাংকটিতে ঢালার ক্ষেত্রে বিরোধিতা করেছেন এমপিরা। তবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ফারমার্স ব্যাংক ডুবলে তার যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে, তা এড়ানো দরকার।
রাষ্ট্রায়ত্ত ৫ সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া ৭১৫ কোটি টাকা দিয়ে আমানতকারীদের চাহিদার আলোকে কিছু অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। ফারমার্স ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তবে বর্তমানে পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ৪০১ কোটি টাকা। এখন পরিশোধিত মূলধন বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকায় উন্নীত করার চেষ্টা চলছে।
পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধির ফলে বর্তমান পরিচালকদের অনেকে পরিচালক থাকার যোগ্যতা হারাবেন। কেননা পরিচালক হতে হলে মূলধনের ২ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
ফারমার্স ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৩ সালের জুনে। কিছু দিনের মধ্যেই নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে ব্যাংকটি। সাইনবোর্ড সর্বস্ব ও অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদান, অন্য ব্যাংকের মন্দঋণ কেনা, ঋণের তথ্য গোপনসহ বিভিন্ন গুরুতর জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। গত সেপ্টেম্বর শেষে এ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দাঁড়ায় ৩৭৮ কোটি টাকা, যা ব্যাংকটির মোট ঋণের ৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ। খেলাপি ঋণের এ হার নতুন ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।
ফারমার্স ব্যাংক দেশের আর্থিক খাতকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়। চাপের মুখে গত বছরের শেষ দিকে ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদ ছাড়তে হয় ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে। ব্যাংকটির অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহাবুবুল হক চিশতীও এখন দুর্নীতি দমন কমিশনের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি।