ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

টালমাটাল চালের বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৬, ২০২০

টালমাটাল চালের বাজার

চালের বাজার আরও অস্থির হয়ে উঠেছে। হঠাৎ করে টানা এক সপ্তাহে সব ধরনের চাল প্রতি কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় মিল মালিকদের কারসাজিতে চালের দাম দফায় দফায় বাড়ছে। এ মুহূর্তেই লাগাম টেনে ধরা না গেলে শুধু বাজার অস্থিরতার কারণে সরকারের সব অর্জন ম্লান হয়ে যেতে পারে বলে সচেতন মহলের আশঙ্কা। এ ছাড়া মাছের দাম কিছুটা বাড়লেও ৫ থেকে ১০ টাকা কমেছে সবজিতে। কমেছে নতুন আলু ও পেঁয়াজের ঝাঁজও। অপরিবর্তিত রয়েছে ডিম, মাংস, মসলা ও ভোজ্যতেলসহ অন্য পণ্যের দাম।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি গুদাম, মোকাম ও পাইকারি বাজারে বিপুল পরিমাণ চাল মজুদ রয়েছে। এ অবস্থায় বাজারে মোটা চালের দাম কোনোভাবেই বাড়ার কথা নয়। হাতে গোনা কয়েকজন মিল মালিকের কারসাজিতে চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠছে এমন অভিযোগ পাইকারি ব্যবসায়ীদের। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বাবুবাজার ও বাদামতলীর চালের বিভিন্ন আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৮-৫০ টাকা। চিনিগুড়া চাল বিক্রি হচ্ছে ৮৬ টাকা কেজি। বাসমতি চাল গত সপ্তাহে ছিল ৬৬ টাকা কেজি, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। মিনিকেট গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৫৭-৫৯ টাকা কেজি, এ সপ্তাহে ৬২-৬৪ টাকা। নাজিরশাইল গত সপ্তাহে ছিল ৬০ টাকা কেজি, এ সপ্তাহে ৬৭ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে।

দাম বাড়ার পেছনের কারণ জানতে চাইলে বাবুবাজারের কাশেম রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী আবুল কাশেম বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে মোটা চাল মজুদ আছে। গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীর কারসাজিতেই চালের দাম বাড়ছে।

পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে মোটা চালের দর ওঠানামা করে মিল মালিকদের প্রভাবে। বর্তমানে মোটা চাল তৈরির উপযোগী ধানের মজুদ তাদের হাতেই বেশি।

এদিকে সবজির বাজারে ৫ থেকে ১০ টাকা কমে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে পাঁচ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত দাম কমে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা, শালগম বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা, গাজর ৫০ থেকে ৮০ টাকা, শিম ৩০ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৮০ টাকা, পাকা টমেটো ৮০ টাকা, কাঁচা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। প্রতি পিস লাউয়ে ১০ টাকা দাম বেড়ে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, বাঁধাকপি ও ফুলকপিতে ১০ টাকা কমে বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা, ফুলকপি ১৫ থেকে ২০ টাকার মধ্যে।

দাম কমেছে নতুন আলু ও পেঁয়াজের। কেজিতে ১০ টাকা কমে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়, নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, পুরনো দেশি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৬৫ টাকায়। প্রতি কেজি চালের দাম ২ থেকে ৫ টাকা বেড়ে আটাশ ৫৩ থেকে ৫৫ টাকা, পায়জাম ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, মিনিকেট প্রকারভেদে ৬২ থেকে ৬৫ টাকা, নাজির ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, পোলাওয়ের চাল ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। খোলা ভোজ্যতেল লিটার বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। ডিমের দাম অপরিবর্তিত। এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা, হাঁসের ডিম ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৬০ টাকা, ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে সোনালি বা কক ১৮০ ও ব্রয়লার মুরগি কেজি ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। বাজারে প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা, বকরির মাংস ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকা, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকা, মহিষ ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা। বাজারে কেজিতে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে প্রতি এক কেজি শিং মাছ (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, মাগুর মাছ ১২০ থেকে ৬০০ টাকা, মৃগেল ১৭০ থেকে ২৫০ টাকা, পাঙাস ১২০ থেকে ২০০ টাকা, ইলিশ প্রতি কেজি (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রামপুরা বাজারের মাছ বিক্রেতা ফজলুল করিম মনা বলেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে মাছের দাম বেড়েছে। আকারভেদে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ল। বাজারে মাছের সরবরাহ কম থাকায় এ পরিস্থিতি। আশা করি, সরবরাহ বাড়লেই মাছের দাম আগের জায়গায় নেমে আসবে।

 
Electronic Paper