ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১১:১৬ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১২, ২০২০

নিত্যপণ্যের মূল্য প্রতিদিনই বাড়ছে। আগের দিনের মূল্য ছাড়িয়ে যাচ্ছে পরদিন। চাল, ডাল, তেল, লবণ, আলু, পেঁয়াজ, মরিচ, আদা, শাকসবজিÑএমন কোনো পণ্য নেই যার দাম বাড়েনি। এতে সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছেন। ক্রয়ের পরিমাণ কমিয়েও স্বস্তি মিলছে না ক্রেতাদের। তারা বলছেন, এর পিছনে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কাজ করছে। তাদের কাছে ক্রেতা সাধারণ জিম্মি হয়ে পড়েছে। সরকারের মনিটরিংও দৃশ্যমান কিছুই করতে পারছে না। সরকারের নির্ধারণ করে দেওয়া পণ্যমূল্যও মানছে না তারা। উল্টো কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়েই চলেছে।

গতকাল রোববার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মুরগির চেয়েও দাম বেশি সবজির। ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা শিম। আলু বিগত কয়েক দশকের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি। যেখানে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১২০ থেকে ৩০ টাকা। চার মাসের বেশি সময় ধরে চড়া দামে বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচের দাম নতুন করে আরও বেড়েছে।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ২৫০ গ্রাম কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। অর্থাৎ এক কেজি কাঁচামরিচের দাম পড়ছে ৩২০ টাকা। ১১০-১১৫ টাকা ডজন বিক্রি হওয়া ডিমের দাম বেড়ে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এদিকে পাকা টমেটো, গাজর, বেগুন, বরবটির সঙ্গে নতুন করে ১০০ টাকা কেজির তালিকায় নাম লিখিয়েছে উস্তা। এর মধ্যে পাকা টমেটো গত কয়েক মাসের মতো এখনো ১২০ থেকে ১৪০ টাকা এবং গাজর ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর উস্তের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে। বরবটির কেজি গত সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা। বেগুনও গত সপ্তাহের মতো ৮০ থেকে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। শসার কেজি ৯০ টাকা।

অন্যান্য সবজির দামেও ঊর্ধ্বগতি। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এক হালি কাঁচকলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ঝিঙা, কাঁকরোল, ধুন্দলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। বাজারে নতুন আসা ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। ৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে মুলা ও পেঁপে। এর মধ্যে মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা।
এদিকে পেঁয়াজের মজুদ থাকা সত্ত্বেও সুফল পাননি ক্রেতারা। দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। আমদানি করা বড় আকারের ভারতীয় পেঁয়াজেরও কেজি ৮০ টাকা। গত মাসে ভারত রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে যে বেড়েছে, তারপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও আর কমেনি।

গত ২-৩ সপ্তাহে বেড়েছে চালের দামও। মানভেদে প্রতি কেজিতে ২-৪ টাকা বেড়ে গেছে। বর্তমানে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, যা আগে ছিল ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা। নাজিরশাইল চালের দামও কেজিতে ২ টাকা বেড়ে ৬২ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে, ৪৪ থেকে ৪৬ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মাঝারি মানের চালের দাম বেড়ে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা হয়েছে। আড়তে চিকন চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, যা আগে ছিল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা। আর মাঝারি মানের চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৪ টাকা, যা আগে ছিল ৪০ থেকে ৪২ টাকা।

কারওয়ানবাজারের এক ক্রেতা জানান, ১০০ টাকার সবজি দিয়ে এক বেলাও হয় না। সবজির এত দাম আমার ৫০ বছরের জীবনে দেখিনি। তিনি বলেন, অনেক দিন ধরেই সবজির দাম চড়া। এর মধ্যেই তেল, চিনি, আলু, পেঁয়াজ, ডিমের দাম বেড়ে গেল। আগে কখনো পুরাতন আলুর কেজি ৪০ টাকা কিনে খাইনি। এখন ৫০-৫৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে। বাজারের কথা শুনলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের প্রেসারই যেন বেড়ে যায়।

 
Electronic Paper