বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন
আগামী ছয় মাসে ঘুরে দাঁড়াবে শিল্প খাত
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
🕐 ৭:২৬ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ০১, ২০২০
২০২১ সালের জানুয়ারি থেকেই অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য আগামী ছয় মাস উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে। এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং শিল্প খাত ঘুরে দাঁড়াবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্টে এ প্রত্যাশার কথা বলা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্টে বলা হয়, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় ব্যাংকিং খাত সংকটে পড়েছে।
আগামীতে এ সংকট আরও প্রকট হতে পারে। সম্ভাব্য সংকট থেকে ব্যাংকিং খাত উত্তরণের উপায় হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। এমন কিছু উদ্যোগেই কিছুটা কমে এসেছে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ। তবে এখন পর্যন্ত থাকা খেলাপি ঋণের প্রায় অর্ধেকই (৪৫.৮ শতাংশ) রয়েছে ৫ ব্যাংকে।
করোনার কারণে ঋণ গ্রহীতাদের সক্ষমতা কমায় ঋণ আদায়ে শিথিলতা এসেছে বলে উল্লেখ করা হয় রিপোর্টে। যে কারণে ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদের আয় থেকে ব্যাংকিং খাত বঞ্চিত হবে। এতে ব্যাংকগুলোর আয় কম হবে। ফলে নতুন করে বেশি ঋণ বিতরণ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কম সুদে তহবিলের জোগান, সুদ বাবদ ভর্তুকি দিয়ে ব্যাংকগুলোর ক্ষতি মেটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে ৬০টি ব্যাংকের মধ্যে পাঁচ ব্যাংকের কাছেই রয়েছে মোট খেলাপি ঋণের ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ। বাকি ৫৫ ব্যাংকে খেলাপির পরিমাণ ৫৪ দশমিক ২ শতাংশ। অন্যদিকে ১০ ব্যাংকের কাছেই খেলাপি ঋণ রয়েছে ৬৩ দশমিক ৩ শতাংশ। বাকি ৫০ ব্যাংকে খেলাপির হার ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ। গত বছর খেলাপি ঋণের সবচেয়ে বড় একটি অংশ পুনঃতফসিল হয়েছে। এ মধ্যে গত বছরই ৫২ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ নবায়ন করা হয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালে ২৩ হাজার কোটি টাকা, ২০১৭ সালে ১৯ হাজার কোটি টাকা, ২০১৬ সালে ১৫ হাজার কোটি টাকা এবং ২০১৫ সালে ১৯ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে।
এদিকে গত বছর খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের দিক থেকে শীর্ষে ছিল শিল্প খাত। ২০১৯ সালে এ খাতে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করা হয় ৩০ দশমিক ১ শতাংশ। এর পরেই ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ রয়েছে তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে। এছাড়া ১১ দশমিক ৭ শতাংশ ঋণ পুনঃতফসিলীকরণ করা হয়েছে বৈদেশিক বাণিজ্যে। অন্যান্য ১১ দশমিক ৪ শতাংশ, বাণিজ্যিক ঋণে ১০ শতাংশ, চলতি মূলধনে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ, অবকাঠামোতে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ এবং কৃষি খাতে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, করোনার প্রভাবে বিশ্বব্যাপী জ্বালানির চাহিদা কমায় এর দাম কমে গেছে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যেও দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত প্রবাসীদের কাছ থেকে আসা রেমিটেন্স কমে যাবে। দেশের অর্থনীতিকে নেতিবাচক অবস্থা মোকাবিলা করতে হবে।