জমজমাট বাণিজ্য মেলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৫:২০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৯, ২০২০
জমে উঠেছে ২৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। ইতোমধ্যে মেলার ১৮ দিন অতিক্রম হয়েছে। শুরুর দিকে ক্রেতা-দর্শনার্থী খরা থাকলে ধীরে ধীরে সেই অবস্থা কাটিয়ে উঠছে। শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকেই রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের মেলা প্রাঙ্গণে দেখা যায় হাজার হাজার ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড়। পুরো রাজধানী যেন হুমড়ি খেয়ে পড়েছে বাণিজ্য মেলায়।
ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়ে বিকিকিনিও জমজমাট। বিপুল জনসমাগমে বেচাবিক্রি বাড়ায় খুশি বিক্রেতারাও। ছুটির দিন বাবা-মার সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে শিশুরাও মেতে উঠেছে আনন্দে। ঘুরে বেড়ানো, কেনাকাটা, খাওয়া-দাওয়া আর অস্থায়ী শিশু পার্কগুলোর বিভিন্ন রাইডে উঠে খুশি তারা।
ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে গেট ইজারা পাওয়া মীর ব্রাদার্সের পরিচালক মীর মানসুর আলম বলেন, সকাল থেকে যে পরিমাণ দর্শনার্থী এসেছে সেটা খুব বেশি না, আবার খুব কমও না। তবে বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। দর্শনার্থীদের এই ভিড় সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে আমাদের কর্মীদের।
আশা করছি, মেলার বাকি দিনগুলোতে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের এই স্রোত অব্যাহত থাকবে।
মেলার গেটে দায়িত্ব পালন করা সুমন নামের এক কর্মী বলেন, এবারের বাণিজ্য মেলায় আজকেই (শনিবার) সব থেকে বেশি দর্শনার্থী এসেছে। সকাল থেকেই দর্শনার্থীরা আসছেন। তবে দুপুরের পর দর্শনার্থীদের ঢল নামে।
রাজধানীর কমলাপুর থেকে মেলায় আসা তাসবির রহমান বলেন, চাকরির কারণে ছুটির দিন ছাড়া অবসর সময় পাই না। প্রতিবারই মেলায় একাধিক বার ঘুরতে আসি। এবার আজই প্রথম এলাম। হয়তো পরের সপ্তাহে ও মেলার শেষের দিকে আবার আসব। মেলার পুরো প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখার ইচ্ছা আছে। ঘুরতে ঘুরতে কিছু পছন্দ হলে কিনব। তবে নির্দিষ্ট কোনো পণ্য কেনার জন্য মেলায় আসিনি। মেলায় আসার মূল উদ্দেশ্য পরিবার নিয়ে ঘোরাঘুরি করা।
মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা হ্যাপী বেগম বলেন, মেলার প্রথম থেকে পরিবার নিয়ে আসার ইচ্ছা ছিল। সময় সুযোগ করতে না পারায় এতদিন আসা হয়নি। ছুটির দিন থাকায় চলে এসেছি। পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু গৃহস্থালি সামগ্রী কেনার পরিকল্পনা আছে। মেলায় ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে ছাড়সহ নানা অফার দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
মিরপুর-১০ নম্বর থেকে পরিবার নিয়ে মেলায় এসেছেন মাহাবুবা আক্তার। তিনি বলেন, কর্মব্যস্ততার কারণে অন্যদিন মেলায় আসা হয় না। ছুটির দিন হওয়ায় পরিবারের সবাইকে নিয়ে মেলায় এসেছি। কেনাকাটার পাশাপাশি একটু ঘোরাঘুরি হলো।
গৃহস্থালি পণ্যের একটি স্টলের বিক্রয়কর্মী হাসা বলেন, এবার মেলার শুরুতে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্য খুব কম ছিল। ছুটির দিনগুলোতে কিছু বিক্রি হয়েছে। বাকি দিনগুলোতে আমরা মূলত বেশিরভাগ সময় অলস কাটিয়েছি। গত সপ্তাহ থেকে ভালো ক্রেতা-দর্শনার্থী আসা শুরু হয়েছে। আজ (শনিবার) ক্রেতা-দর্শনার্থীর চাপ খুব বেশি। ক্রেতাদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছি। বিশ্রাম নেওয়ার একটুও সময় পাচ্ছি না।
বরাবরের মতো এবারও বছরের প্রথম দিন (১ জানুয়ারি) থেকেই শুধু হয়েছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলায় বাংলাদেশের পাশাপাশি থাইল্যান্ড, ইরান, তুরস্ক, নেপাল, চীন, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, পাকিস্তান, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ভুটান, ব্রুনাই, দুবাই, ইতালি ও তাইওয়ানের প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।