‘ব্যাংকের ভল্টে রাখা স্বর্ণ পুরোপুরি নিরাপদে আছে’
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৩:৩৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৮, ২০১৮
বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রাখা স্বর্ণের ‘হেরফের’ নিয়ে যে প্রতিবেদন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে, তা পুরোপুরি সত্য নয় বলে দাবি করেছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি আরো দাবি করেন, সেখানে রাখা স্বর্ণ পুরোপুরি নিরাপদে আছে। বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে আজ বুধবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী।
এক প্রশ্নের জবাবে এম এ মান্নান বলেন, ‘ভল্ট থেকে স্বর্ণ বাইরে যাওয়ার সম্ভাবনা মোটেও নেই। ছয় স্তরের নিরাপত্তাবলয় পেরিয়ে সেখানে যেতে হয়। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী গভর্নর, তিনিও ভল্টে যেতে পারেন না সিস্টেমের বাইরে। দু-তিন জায়গা থেকে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে যেতে হয়। আর আমাদের তো প্রশ্নই আসে না। ফলে আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন যে কিছু বাইরে যায়নি।’
‘ইংলিশ-বাংলা করণিক ভুলের কারণে এ রকমটা হতে পারে’ এমনটা মন্তব্য করে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তবে আমরা বিষয়টা ছোট করে দেখছি না। আমি ছোট করে দেখছি না। সামান্য ফাঁক দিয়েও বড় ঘটনা ঘটে যায়।’ তিনি আরো বলেন, ‘যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। ফিরে গিয়ে তাঁরা আবার বসবেন। আবার আলোচনা হবে।’
সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী এম এ মান্নান আরো বলেন, ‘আমি আমার কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো এবং এটাকে আমাদের লেভেলে অথবা অন্য কোন সংস্থাকে দিয়ে আরো অধিক পর্যালোচনা করবো। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক ভীত নয়। গভর্নর বলে গেছেন, আপনারা যাকে দিয়ে দেখাবেন দেখান। আমাদের তরফ থেকে কোনো সংশয় নেই, সবকিছু ঠিকই আছে। জনগণের যেটা জানানোর দায়িত্ব, তাদের সম্পদ বাংলাদেশ ব্যাংকে ঠিকই আছে, সঠিক আছে।’
গতকাল মঙ্গলবার দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের এক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রাখা স্বর্ণে অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে। দৈবচয়ন পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রাখা ৯৬৩ কেজি স্বর্ণ পরীক্ষা করে বেশিরভাগের ক্ষেত্রে অনিয়ম ধরা পড়ে। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করে শুল্ক গোয়েন্দা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘জমা রাখা হয়েছিল তিন কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের সোনার চাকতি ও আংটি, তা হয়ে আছে মিশ্র বা সংকর ধাতু। ২২ ক্যারেট সোনা, হয়ে আছে ১৮ ক্যারেট।’
এর পর গতকালই বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ প্রতিবেদন যথাযথ নয় বলে দাবি করা হয়।
ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. রবিউল হুসাইন বলেন, ‘শুল্ক গোয়েন্দা দপ্তরের নিজস্ব রিপোর্টের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো সম্পর্ক নেই। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মেশিনের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মেশিনের মাপের পার্থক্য হয়। এই মেশিন নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।’