বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বলছেন, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো বড় বড় প্রকল্পে নির্মাণের কাজ চলছে। এসব প্রকল্পে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি আমদানি করতে হচ্ছে। এতে আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে। অন্যদিকে রপ্তানি ব্যয় হ্রাস পেয়েছে। এ কারণে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে চলেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের করা হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ইপিজেডসহ রপ্তানি খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে ৯৫৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আমদানি বাবদ ব্যয় করেছে এক হাজার ৩২৫ কোটি ২০ লাখ ডলার। সেই হিসাবে সেপ্টেম্বর শেষে দেশে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় ৩৭১ কোটি ৭০ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় (বিনিময় হার ৮৪ টাকা ৭৫ পয়সা দরে) দাঁড়ায় প্রায় ৩১ হাজার ৫০১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। ঘাটতির এ অংক ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময় ছিল ৩৮৫ কোটি ডলার। অর্থাৎ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এবার ঘাটতি কিছুটা কম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকলেও সেপ্টেম্বরে এসে তা ঋণাত্মক হয়ে গেছে। প্রথম প্রান্তিকে চলতি হিসাবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা আগের বছরে একই সময়ে ছিল ১৩১ কোটি ৬০ লাখ ডলার।

এদিকে আলোচিত সময়ে সেবাখাতে বেতনভাতা বাবদ বিদেশিদের পরিশোধ করা হয়েছে ২৩৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার। আর বাংলাদেশ এ খাতে আয় করেছে ১৩৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এ হিসাবে সেবা বাণিজ্যে দেশে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৯৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার। যা গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল (ঘাটতি) ৬৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার। তিন মাসে প্রবাসীদের আয় রেমিট্যান্স এসেছে ৪৫১ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৩৮০ কোটি ৭০ লাখ ডলার। রেমিট্যান্সে ১৬ দশমিক ৭০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, রপ্তানি আয় অস্বাভাবিকভাবে হ্রাস পেয়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) রপ্তানিতে বৈদেশিক মুদ্রার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১ হাজার ৪৩২ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার। এ সময়ে অর্জিত হয়েছে ১ হাজার ২৭২ কোটি ১২ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ দশমিক ২১ শতাংশ কম। এর প্রভা পড়েছে বাণিজ্য ঘাটতিতে।