হতাশ সোনালী জনতা অগ্রণীর ডিজিএমরা
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
🕐 ১০:২০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০১৯
রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের ডিজিএম পদোন্নতিসম্পর্কিত এক প্রজ্ঞাপনে সোনালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মাঝে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এখন থেকে সব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ গঠিত বিশেষ কমিটি দ্বারা পদোন্নতি পাবেন। এর ফলে তিন ব্যাংকের বাইরে অন্যান্য ব্যাংকের কম দক্ষ অথচ বাড়তি পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তারা বেশি সুফল পাবেন। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ গত ১৭ জুলাই এক প্রজ্ঞাপনে ডিজিএম থেকে জিএম পদে পদোন্নতি ও পদায়ন তাদের আওতাভুক্ত করে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি কমপক্ষে তিন বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ডিজিএমদের সমন্বিতভাবে পদোন্নতির জন্য বিবেচনা করে জিএম পদে পদোন্নতি দিয়ে পদায়ন বা বদলি করবে। এতেই গোল বেঁধেছে বড় তিন ব্যাংকে। কারণ ওইসব ব্যাংকে এতদিন সময়মতো পদোন্নতি হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে অনেকেই এজিএম পদে দায়িত্ব পালন করলেও ডিজিএম পদে পদোন্নতি পাননি।
কিন্তু অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কম অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অনেকেই বর্তমানে ডিজিএম পদে কর্মরত। ফলে সমন্বিত তালিকায় বড় ব্যাংকগুলোর পুরনো কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম। এ বিষয়ে তিন ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বক্তব্য, ব্যাংকগুলোকে লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরের এক যুগ পরে এসে পুরনো পদ্ধতিতে ফিরে গেলে অনেক কর্মকর্তাই যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতি পাবেন না। এ আশঙ্কা থেকে এই তিন ব্যাংকের ডিজিএমদের একটি দল সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার দাবি জানিয়েছে।
এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংকগুলোর পর্ষদের মাধ্যমে পদোন্নতির ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এ জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে জ্যেষ্ঠতার তালিকা অনুযায়ী পদোন্নতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এ যুক্তি মানতে নারাজ ব্যাংকারদের অনেকেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, বর্তমানে যেসব কর্মকর্তা ডিজিএম বা এজিএম পদে কর্মরত তারা ব্যাংকার্স রিক্রুটমেন্ট কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত।
কিন্তু কোনো কোনো ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময়ে বছরে একাধিকবার একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ ধরে পদোন্নতি দিয়েছে। পদও বাড়িয়েছে অনেক ক্ষেত্রে। কোনো কোনো ব্যাংকে একই পদে দুই বছর থাকার পর পরবর্তী পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সোনালী, জনতা ও অগ্রণীতে একই পদে তিন বছর চাকরি না করলে কোনো কর্মকর্তা পরবর্তী পদে পদোন্নতি পাননি। কোনো কোনো ব্যাংকে ১৯৯৮ সালে নিয়োগ পাওয়া সিনিয়র অফিসার বর্তমানে জিএম। আর ওই বছর অফিসার হিসেবে যোগ দেওয়া কর্মকর্তারা এখন ডিজিএম।
অথচ সোনালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংকে ১৯৮৬, ১৯৮৮, ১৯৯৪ এবং ১৯৯৫ সালে সিনিয়র অফিসার হিসেবে যোগদান করা কিছু কর্মকর্তা ডিজিএম হয়েছেন। বাকিরা এখনো এজিএম পদে রয়েছেন। ১৯৯৮ সালে সিনিয়র অফিসার হিসেবে যোগদান করা কর্মকর্তাদের কেউ কেউ সবেমাত্র এজিএম হয়েছেন। ফলে সরকার এখন জ্যেষ্ঠতার তালিকা করে ডিজিএম থেকে জিএম পদোন্নতি দিলে এই তিন ব্যাংকের কেউ আগামী ১৫ বছরে জিএম হওয়ার সুযোগ পাবেন না।