ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বাজারে নিষিদ্ধ রেনিটিডিন

অভিযানে নামছে ভোক্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১১:০৩ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ০৬, ২০১৯

গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে বহুল প্রচলিত ওষুধ রেনিটিডিনে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান পাওয়ায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে ওষুধটি। সেই অনুসারে গত ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে ওষুধটির ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর। একইসঙ্গে বাজার থেকে এই ওষুধ তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় ঔষধ শিল্প সমিতি। তবুও এখনো বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ রেনিটিডিন। নিষিদ্ধঘোষিত হওয়ার পর এখনও বাজার থেকে ওষুধটি তুলে না নেওয়ায় এটি বন্ধে কেউ অভিযোগ করলেই অভিযান চালাবে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর।

প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা খোলা কাগজকে বলেন, সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে নিষিদ্ধঘোষিত ওষুধটি দ্রুত বাজার থেকে সরাতে অভিযান চালানো হবে। কোন ফার্মেসিতে ওষুধটি বিক্রি হচ্ছে, কেউ অভিযোগ করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানা গেছে, এখন পর্যন্ত রেনিটিডিন ওষুধ ফিরিয়ে নিয়ে যায়নি কোম্পানি। বরং আগের মতোই ওষুধটি বিক্রি হচ্ছে।

গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ওষুধের দোকানগুলোতে এখনো বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ রেনিটিডিন। শুধু ট্যাবলেটই নয়, রেনিটিডিনের সিরাপ এমনকি ইনজেকশনও বেশ বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা।

খুচরা ওষুধ বিক্রেতারা জানান, সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে তাদের কাছে কোনো ধরনের নির্দেশনা আসেনি। গণমাধ্যমে কিছু প্রতিবেদন দেখলেও সরাসরি তাদের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। এদিকে ওষুধ কোম্পানিগুলো নতুন রেনিটিডিনের চালান না দিলেও পুরনো রেনিটিডিন ফেরত নিয়ে যায়নি। আর চাহিদা বেশি থাকায় দোকানগুলোতে সবসময় ব্যাপক পরিমাণ রেনিটিডিন রাখা হতো। সব মিলিয়ে ক্রেতাদের চাহিদানুসারে বাজারে থাকা রেনিটিডিনগুলো হরদম বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার একজন ওষুধ বিক্রেতা জানান, সবাই বিক্রি করছে, তাই আমিও বিক্রি করছি। কেউ এখনো বলেনি ওষুধটি বিক্রি নিষেধ করতে। একজন ক্রেতা জানান, অনেকেই জানে না যে, ওষুধটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর জন্য যাদের প্রচারণা চালানো দরকার তারাও ব্যাপক আকারে প্রচারণা চালাচ্ছে না।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, বাজারে নিবন্ধিত বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির ২২০ ধরনের রেনিটিডিন ওষুধ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন মাত্রার রেনিটিডিন ট্যাবলেট, সিরাপ ও ইনজেকশন। রেনিটিডিন প্রস্তুতকারী প্রায় প্রতিটি ফার্মা কোম্পানিরই বিভিন্ন মাত্রায় এই তিন ধরনের ওষুধই রয়েছে। এর মধ্যে ৩১টি কোম্পানি ভারতের দুটি কোম্পানি থেকে রেনিটিডিনের কাঁচামাল গ্রহণ করলেও অন্যান্য কোম্পানিগুলো সরাসরি তাদের (রেনিটিডিন) কাছ থেকে কাঁচামাল কিনেই ওষুধ প্রস্তুত করত।

ক্রেতা থেকে শুরু করে ওষুধ প্রস্তুতকারী ও বিক্রেতারা পর্যন্ত সবাই জানেন, ওষুধটি শরীরের জন্য কতটা ঝুঁকিপূর্ণ। কেননা মার্কিন ফুড ও ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) প্রতিবেদন অনুসারে রেনিটিডিনের কাঁচামালে এনডিএম (মেটালো বেটা ল্যাকটামেজ) ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ব্যাকটেরিয়া মানবদেহে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে থাকে।

দূষিত বাতাস থেকে এটি মানবদেহে প্রবেশ করেই মারাত্মক ক্ষতি করে। সেক্ষেত্রে যদি ওষুধের মাধ্যমে সরাসরি রক্তের সঙ্গে মিশে যায়, তাহলে ক্যান্সারের ফ্যাক্টর বা সৃষ্টিকারী উপাদান হিসেবে কাজ করতে পারে।

 
Electronic Paper