তিন ব্যাংকেই ৭৩ শতাংশ আমানত
জাফর আহমদ
🕐 ১০:৩৭ অপরাহ্ণ, জুন ২৫, ২০১৯
উঠতি অর্থনীতির এলাকাতে ব্যাংকিং সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক চালু করেছিল এজেন্ট ব্যাংকিং। ২০১৩ সালে দেশে কম খরচের ব্যাংকিং সেবা চালু হয়। শুরুতে একটি ব্যাংকের মধ্যে এ সেবা সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে ১৯টি ব্যাংক এ সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু তিনটি ব্যাংকের বাইরের অন্যান্য ব্যাংক ভালো করতে পারেনি। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সংগৃহীত আমানতের ৭৩ শতাংশই রয়েছে এ ৩ ব্যাংকের কাছে।
২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর এজেন্ট ব্যাংকিং নীতিমালা জারির পর ২০১৪ সালে প্রথম এ সেবা চালু করে বেসরকারি খাতের ব্যাংক এশিয়া। পরবর্তীতে এজেন্ট ব্যাংকিং করার জন্য ২১টি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী সর্বশেষ ১৯টি ব্যাংক দেশব্যাপী এ সেবা দিচ্ছে। এসব ব্যাংকের ৮ হাজার ৮৬৬ জন এজেন্ট ৭ হাজার ৮৩৮টি আউটলেটের মাধ্যমে ২৯ লাখ ৬৫৫ জন গ্রাহককে সুবিধা দিচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আসা আমানতের বেশির ভাই রয়েছে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ডাচ বাংলা ও ব্যাংক এশিয়ার কাছে। এজেন্ট ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট আমানতের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ১১২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। তবে ২০১৯ সালের মার্চ শেষে এই কার্যক্রমে ব্যাংকের আউটলেটের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমানতের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৭৩৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে অবকাঠামোগত সুবিধা ও কম জনবল প্রয়োজন হয় বলে পরিচালনা ব্যয়ও কম হচ্ছে। এতে গ্রাহক পর্যায়েও কম খরচে সেবা পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকাররা।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের মার্চ মাস পর্যন্ত এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মোট আমানতের পরিমাণ ৩ হাজার ৭৩৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা হলেও মাত্র তিন ব্যাংকের কাছেই রয়েছে ২ হাজার ৭৩৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। যা মোট আমানতের ৭৩ শতাংশ।
এর মধ্যে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে ১ হাজার ২৪ লাখ ৩৪ হাজার ৯৩ কোটি, ডাচ বাংলা ব্যাংকে ৯৫৫ লাখ ৫৬ হাজার ১০ কোটি ও ব্যাংক এশিয়াতে ৭৫৩ লাখ ৬১ হাজার ৮৪ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ পর্যন্ত ২০টি বাণিজ্যিক ব্যাংককে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৯টি ব্যাংক মাঠপর্যায়ে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
ব্যাংকগুলো হলো, এনআরবি ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, দ্য সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক ও ইন্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড।
এসব ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং মাধ্যমে আমানত সংগ্রহের পাশাপাশি ক্ষুদ্র পরিসরে ঋণ বিতরণ ও প্রবাসীদের কাছে থেকে প্রাপ্ত রেমিটেন্ট বিতরণেও ভূমিকা রাখছে। তথ্য অনুযায়ী ১৭ ব্যাংক তাদের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৭ হাজার ১৮২ কোটি ৬৪ লাখ ৬২ হাজার টাকা রেমিট্যান্স বিতরণ করেছে।