ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ক্রমবর্ধমান রপ্তানি আয় ওষুধে

বছরে অর্জন সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা

জাফর আহমদ
🕐 ১০:৩৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৮, ২০১৯

ওষুধ শিল্প শোনাচ্ছে আশার গান। বাংলাদেশের রপ্তানি তালিকায় ক্রমবর্ধমান পণ্য এখন ওষুধ। বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ও ওষুধ তৈরির কাঁচামাল রপ্তানি করে বছরে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় হচ্ছে। পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বড় ভূমিকা রাখছে এ শিল্প।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৮ সালে ৩ হাজার ৫১৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা ওষুধ ও ওষুধের কাঁচামাল রপ্তানি হয়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যে দেখা যায় এ বছরের মে পর্যন্ত ১০ হাজার ৩৩ কোটি টাকার ওষুধ রপ্তানি হয়েছে। আর গত ১০ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এ সময়ে ওষুধ রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় আট গুণ। ওষুধ উৎপাদনে সরকারের প্রণোদনা, নীতি সহায়তা, দেশের ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ওষুধের মানের উন্নতি এবং বাংলাদেশের ওষুধের রয়্যালিটি ছাড় পাওয়ার কারণে রপ্তানি বেড়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২০০৯ সালে ওষুধ রপ্তানি হয় ৩৪৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা। পরের বছর কিছুটা কমে। তবে ২০১১ সালে আবার বৃদ্ধি পায়। সে বছর রপ্তানি হয় ৪২৬ কোটি ১৫ লাখ টাকার ওষুধ। ২০১২ সালে রপ্তানি হয় ৫৫১ কোটি ২২ লাখ টাকা। এরপর ২০১৩ সালে ৬১৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা; ২০১৪ সালে ৭৩৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা। ২০১৫ সালে এক ওষুধ রপ্তানি বেড়ে দাঁড়ায় ১০০৮ কোটি ৮ লাখ টাকা; ২০১৬ সালে দ্বিগুণ রপ্তানি হয়ে ওষুধ রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়ায় ২২৪৭ কোটি ৫ লাখ টাকা; ২০১৭ সালে ৩ হাজার ১৯৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ হাজার ৫১৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা।

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে ওষুধের অভ্যন্তরীণ চাহিদার ৯৮ ভাগ আমদানি নির্ভর ছিল। সে সময় বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে ওষুধ আমদানি করতে হতো। বর্তমানে ৯৮ ভাগ ওষুধের চাহিদা স্থানীয়ভাবে মেটানো হয়। এর বাজার মূল্য প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা। আর বাকি ২ শতাংশ বায়োসিমিলার, অ্যান্টিক্যান্সার ড্রাগ ও ভ্যাকসিনের মতো কিছু ‘হাইটেক প্রোডাক্ট’ ওষুধ আমদানি করতে হয়। এর মূল্য প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা।

জানা গেছে, দেশে বছরে মোট প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকার ওষুধ উৎপাদন হয়। ২৭২টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসব ওষুধ উৎপাদন করে। বিশ্বের ১৪৬টি দেশে রপ্তানি হয় ওষুধ। এর বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা মেধাস্বত্ব আইন অনুযায়ী মৌলিক ওষুধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে আবিষ্কারক দেশকে রয়্যালিটি দিতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশ এ শিল্পে এখনো স্বল্পোন্নত দেশের সুবিধা পাচ্ছে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ঘোষণা অনুযায়ী ২০৩৩ সাল পর্যন্ত এ সুবিধা পাবে। এই রয়্যালিটি সুবিধার কারণে বাংলাদেশ ওষুধ উৎপাদনে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে। যা ওষুধ রপ্তানিতে প্রভাব পড়ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ মনে করে আগামী ১৩ বছরের ওষুধ রপ্তানিতে দক্ষতা ও প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অর্জন করবে। এ সময়ের পর বিশেষ সুবিধা বন্ধ হলেও ওষুধ রপ্তানিতে বাংলাদেশকে কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না।

 
Electronic Paper