ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

পর্যবেক্ষণ

বাজেট হবে ন্যায্যতাভিত্তিক

এম এ মান্নান, পরিকল্পনামন্ত্রী
🕐 ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ, জুন ১২, ২০১৯

এবারের বাজেট হবে ন্যায্যতাভিত্তিক। আর এই বাজেটের সুফল দেশের বেশিরভাগ মানুষের কল্যাণে যাবে। বেশিরভাগ মানুষ বলতে আমি তাদেরই বুঝি, যেসব নাগরিক প্রান্তিক থেকে আস্তে আস্তে উপরের দিকে উঠে আসছে। আমাদের দেশের অর্ধেকের বেশি মানুষ নিম্নআয়ের। ২০ শতাংশ মানুষ এখনো বৈষয়িক বিচারে দরিদ্র। এর মধ্যে ১০ শতাংশ অতিদরিদ্র। আগামী বাজেটে এসব মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে নতুন বার্তা থাকবে।

বাজেটে এমনভাবে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে যাতে আয় বাড়ানোর মতো কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা যায়; যাতে করে নিম্নআয়ের মানুষকে উপরের আয়ে নিয়ে আসা যায়, অতিদরিদ্র মানুষকে দরিদ্র মানুষের কাতারে নিয়ে আসা যায়। বৈষয়িক বিচারে যারা এখনো দরিদ্র তাদের নিম্ন মধ্যম আয়ের মানুষের পর্যায়ে উন্নীত করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। সেটি মাথায় রেখেই এডিপি প্রণয়ন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বাজেটের অর্থ বরাদ্দেও বিশেষ নজর রাখা হয়েছে।

এবারের বাজেটে গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরও চাঙ্গা করতে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। শহরের সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দেওয়ার জন্য থাকবে বিশেষ পদক্ষেপ। এ জন্য গ্রামের অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার থাকবে যোগাযোগ খাতে। সড়ক যোগাযোগের পাশাপাশি রেল যোগাযোগও বাড়ানো হবে। ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে প্রতিটি জেলাকে রেল যোগাযোগের আওতায় আনার।

পর্যটন এলাকাগুলোকেও রেল যোগাযোগের আওতায় আনা হচ্ছে। এসব অবকাঠামো নির্মিত হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে। তখন গ্রামের অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে যাবে। গ্রামে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মিত হবে। ইউনিয়নকে গ্রামের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে প্রতিটি ইউনিয়নের সদর এলাকা পরিণত হবে একটি ‘অর্থনৈতিক পাওয়ার হাউস’ হিসেবে। এতে সবচেয়ে বেশি উপকার হবে কৃষির। কৃষক তার পণ্য সহজেই নিকটস্থ বাজারে নিয়ে আসতে পারবে।

এবারের বাজেটে অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। দেশের অর্থনীতিকে আমরা দ্রুত এগিয়ে নিতে চাচ্ছি। এ জন্য অনেক মেগা প্রকল্প (অগ্রাধিকার) বাস্তবায়নে একসঙ্গে হাত দেওয়া হয়েছে। এগুলো দ্রুত এগিয়েও নেওয়া হচ্ছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কমিটি রয়েছে। তার নির্দেশনা ও বিশেষ তত্ত্বাবধানে ফাস্টট্র্যাকভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আইএমইডি (বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ) এবং প্রকল্প পরিচালকরা তো আছেন। এভাবে সব পক্ষের তত্ত্বাবধানে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।

মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য এসব প্রকল্পে অর্থছাড় দ্রুত করা হচ্ছে। প্রচলিত বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। ঋণ গ্রহণের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। বৈদেশিক ঋণের ব্যাপারে সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। প্রয়োজনে বিশেষ বৈঠক করা হচ্ছে। তবে মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন কিছুটা পিছিয়েছে। বিদ্যমান সমস্যা সমাধান করে এখন দ্রুত বাস্তবায়ন কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী বছর এ সেতুর ওপর দিয়ে গাড়ি চলতে পারবে। সে লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে।

এবারের বাজেটেও পদ্মা সেতুর ওপর বিশেষ বরাদ্দ থাকছে। শুধু পদ্ধা সেতু বাস্তবায়ন হলেই দেশের দক্ষিণাঞ্চলে যে কর্মচাঞ্চল্য দেখা দেবে, তাতে জিডিপি ১ থেকে দেড় শতাংশ বেড়ে যাবে।

 
Electronic Paper