শেয়ারবাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জানুয়ারি মাসে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের উত্থান হয়। প্রায় এক মাস টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ে। কিন্তু জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে এসে ছন্দপতন ঘটে শেয়ারবাজারে। দেখা দেয় টানা দরপতন।

এরপর একে একে সাড়ে ৩ মাস কেটে গেলেও দরপতনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারেনি শেয়ারবাজার। ফলে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে শেয়ারবাজারের সমস্য সমাধানে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়। সরকারের উপর মহলের নির্দেশে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ (বিএসইসি) এবং বাংলাদেশ ব্যাংক।

পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংকের এক্সপোজার সংশোধনীর ইঙ্গিত দেওয়া হয়। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) দেওয়া হচ্ছে ৮৫৬ কোটি টাকার তহবিল। শেয়ারবাজার থেকে যাতে টাকা বের হয়ে না যায়, সেজন্য বন্ধ করা হয়েছে প্লেসমেন্ট। নতুন করে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদন না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।

গতকাল মঙ্গলবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ২৯ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ২১৭ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূুচক ৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২০৩ পয়েন্টে। আর ডিএসই-৩০ সূচক ১০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮২৫ পয়েন্টে নেমে গেছে। মূল্যসূচকে এই পতনের দিনে ডিএসইতে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে প্রায় তার তিনগুণের। দিনভর বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে।

বিপরীতে দাম কমেছে ২১৯টির এবং দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৫২টির। মূল্যসূচক ও সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের পাশাপাশি ডিএসইতে দেখা দিয়েছে লেনদেন খরা। বাজারটিতে ২০১৮ সালের ২৫ মার্চের পর সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে। গতকাল টাকার অঙ্কে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৫১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩০৫ কোটি ৩ লাখ টাকার। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৫৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। বাজারটিতে টাকার পরিমাণে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ফরচুন সুজের শেয়ার।