বিড়ি-সিগারেটের রাজস্ব ফাঁকি রোধে নতুন শর্ত
নাজমুল হুসাইন
🕐 ৯:১০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৯, ২০১৯
দেশের পণ্যভিত্তিক রাজস্বের সবচেয়ে বেশি আসে তামাকজাত পণ্য থেকে। যদিও নানা কৌশলে এখনো এ খাতের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছেন। এ কারণে রাজস্ব আহরণ নিশ্চিত করতে তামাকজাত পণ্য উৎপাদন ও বিপণন পর্যায়ে নতুন কিছু শর্ত আরোপ শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এরই প্রথম ধাপে বিড়ি ও সিগারেটের পেপার বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নতুন কিছু শর্ত আরোপ করা হচ্ছে।
এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, বিড়ি ও সিগারেটের পেপার ক্রয়-বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে মূল্য সংযোজন কর যথাযথভাবে প্রদান না করার অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে রাজস্ব আহরণ নিশ্চিত করতে মূল্য সংযোজন কর বিধিমালা, ১৯৯১-এর বিধি ৩৮ এর ক্ষমতাবলে এসব আদেশ জারি করা হচ্ছে। আগামীতে গেজেটে সেটা প্রকাশের জন্য সরকারি মুদ্রাণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
গত ১০ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানটির ভ্যাট বিভাগ থেকে জারিকৃত ওই আদেশের শর্তে বলা হয়েছে, এখন থেকে স্থানীয় পর্যায়ে বিড়ি ও সিগারেটের পেপার বিক্রয়ের ক্ষেত্রে পেপার ক্রয়কারী (বিড়ি-সিগারেট উৎপাদনকারী) প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব বিক্রয়কারীকে নিজ বিভাগীয় দপ্তরে নিশ্চিত করে জানাতে হবে। এছাড়া মূল্য সংযোজন করের ক্ষেত্রে নিয়মিত দাখিলপত্র প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করে ইস্যুকৃত প্রত্যয়নপত্র দাখিলের পরে বিক্রয় সম্পূর্ণ করতে হবে।
এছাড়াও পেপার বিক্রয়ের পরে পণ্যের ক্রেতার সব তথ্যসহ ক্রয়সংক্রান্ত সব তথ্য বিভাগীয় দপ্তরকে জানাতে হবে। এরপর পণ্য মূসক-১৬ সে তথ্যসাপেক্ষে ক্রয়সংশ্লিষ্ট মূল্য সংযোজন কর আদায় নিশ্চিত করবে। এ বিষয়ে একজন কমিশনার যথাযথ তত্ত্বাবধায়নে থাকবেন।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রথম সচিব (মূসক-নীতি) হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার বলেন, বিড়ি ও সিগারেটের পেপার ক্রয়-বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে মূল্য সংযোজন কর যথাযথভাবে প্রদান না করার অভিযোগ আমাদের কাছে রয়েছে। এ কারণে আদেশগুলো জারি করা হচ্ছে। এরপর সেটা মেনে চলতে হবে। এ আদেশের কোনো শর্ত ব্যত্যয় হলে তার জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা থাকবে। এতে রাজস্ব ফাঁকি কমানো সম্ভব।
প্রধান রাজস্ব খাত হলেও তামাকজাত পণ্যের অবৈধ বাণিজ্যে দেশে প্রতিবছর রাজস্ব ক্ষতি হয় ১০ কোটি মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮৩৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। যদিও প্রতিবছর করহার বাড়ানোর কারণে এ খাতে সরকারের রাজস্ব বাড়ছে। সব মিলে রাজস্ব আদায় শতভাগ নিশ্চিত সম্ভব হলে এ খাত থেকে আয় আরও বাড়বে।
‘কনফ্রন্টিং ইল্লিসিট টোব্যাকো ট্রেড : এ গ্লোবাল রিভিউ অব কান্ট্রি এক্সপেরিয়েন্স’ শীর্ষক প্রতিবেদনে তামাক খাতে অবৈধ বাণিজ্য জন্য দেশের কাঠামোগত দুর্বলতা, নিয়ন্ত্রক সংস্থার গাফিলতি এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের ওপর নিয়ন্ত্রণহীনতাকে চিহ্নিত করেছিল বিশ্বব্যাংক।