ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ছোলা-ডালে সুখবর পিয়াজে শঙ্কা!

রমজানে দ্রব্যমূল্য

নাজমুল হুসাইন
🕐 ১২:৪৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৭, ২০১৯

রমজান আসার আগেই নিত্যপণের দাম বেড়ে যায়। এবারও হাতেগোনা কয়েকটি ছাড়া প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়ে গেছে আগেভাগে। রমজানের বিশেষ উপকরণ ছোলা ও ডালে স্বস্তির খবর পাওয়া গেলেও পিয়াজের দাম ঘিরে আশঙ্কা কাজ করছে। কারণ পিয়াজ বেশি সময় মজুদ রাখা সম্ভব হয় না। আবার পণ্যটি আমদানিনির্ভর। ভারতের রপ্তানি মূল্যের ওপরই নির্ভর করবে রমজানে দেশে পিয়াজের দাম।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতি রমজানেই পিয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য বাড়িয়েছে ভারত। কারণ সে সময় বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে পণ্যটির চাহিদা বেড়ে যায়। আর সুযোগটি কাজে লাগায় এশিয়ার প্রধান পিয়াজ রপ্তানিকারক দেশ ভারত। গত বছরও রমজানের বাজারে কেনাবেচা শুরু হওয়ার আগে দেশে পিয়াজের দর ছিল কেজিপ্রতি ৩০ টাকা। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই দফায় দফায় পণ্যটির দাম বেড়ে ৫০ টাকায় ওঠে। এ ঘটনা নতুন নয়। বিগত কয়েক রমজানে এমনটা ঘটেছে।

২০১৪ সালের জুনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ভারত থেকে প্রতি টন পিয়াজের এলসি মূল্য ছিল ১৫০ মার্কিন ডলার যা পরবর্তী সময়ে দুই দফা বেড়ে রমজানের সময় এলসি মূল্য ৫০০ মার্কিন ডলারে উন্নীত করে দেশটি। তথ্যমতে, পিয়াজের আবাদ এখনো রবি মৌসুমেই সীমাবদ্ধ। দেশে পণ্যটির বার্ষিক চাহিদা দাঁড়িয়েছে ২৭ থেকে ২৮ লাখ টন। যদিও সরকারের বিভিন্ন সংস্থার এ নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। তবে রমজানে প্রায় পাঁচ লাখ টন পিয়াজের প্রয়োজন পড়ে বলে জানায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

এর মধ্যে দেশে গত বছর উৎপাদন হয়েছে প্রায় ২১ লাখ টন পিয়াজ। ফলে স্বাভাবিকভাবে চাহিদার তুলনায় ঘাটতি থেকে যাচ্ছে ছয় থেকে সাত লাখ টন। কিন্তু বাজারে ভারতীয় পিয়াজের আধিক্য চোখে পড়ে। দামও নির্ধারণ হয় ভারতীয় পিয়াজের জোগান ও দামের সঙ্গে সমন্বয় করে। এ অবস্থায় ভারত থেকে আমদানি করা পিয়াজের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে গেছে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে। ফলে পাইকারি বাজারে এখন ভারতের নাসিক জাতের পিয়াজ ২০ থেকে ২১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া সুখসাগর ও অন্যান্য জাতের পিয়াজ ১৫ থেকে ১৭ টাকায় উঠেছে যা আগে ১২ থেকে ১৩ টাকা ছিল।

এ বিষয়ে পণ্যটির আমদানিকারক পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের আব্দুল মাজেদ বলেন, যে যাই বলুক, কাঁচা পণ্যের দাম আগেভাগে সুনির্দিষ্ট করে বলা যায় না। আর ভারতের সময়মতো দাম বাড়ানোর অভ্যাস রয়েছে। এবারও ভারত দাম বাড়ালে দেশের বাজারে পণ্যটির দাম অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। তবে এ বছর সুখবর রয়েছে ছোলা ও ডালের দামে। বিশেষ করে এ দুই পণ্যের বাজার অস্থির হওয়ার চিরাচরিত চিত্র এবার নেই। পর্যাপ্ত আমদানি ও আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং দর কম থাকায় এখন পর্যন্ত পণ্য দুটি স্থিতিশীল রয়েছে। আর এসব পণ্য মজুদ রাখা সম্ভব হয় বলে দাম বৃদ্ধির যৌক্তিক কোনো কারণও থাকছে না।

জানা গেছে, রমজানে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টন ছোলার প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (মার্চ পর্যন্ত) দেশে ১ লাখ ১২ হাজার টন ছোলা আমদানি হয়েছে। রমজানের বাকি তিন সপ্তাহের মধ্যে আরও ৭০-৮০ হাজার টন আমদানিকৃত ছোলা পাইপলাইনে রয়েছে। ফলে পণ্যটির মজুদ চাহিদার বেশি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শফি মাহমুদ খোলা কাগজকে বলেন, এখনো বাজারে যে দামে ছোলা বিক্রি হচ্ছে, তা অন্যান্য বছরের রোজার থেকে কম। আর পর্যাপ্ত আমদানির কারণে এবার ছোলার দাম বাড়ার আশঙ্কা নেই।

 
Electronic Paper