ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আগামী বাজেটে তিন চ্যালেঞ্জ

জাফর আহমদ
🕐 ১০:৪৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৬, ২০১৯

সংখ্যা তাত্ত্বিক দীর্ঘ বাজেটের পরিবর্তে সংস্কার ও বাস্তবায়নধর্মী বাজেট আসছে। যে বাজেটে অপ্রয়োজনীয়ভাবে টাকার অঙ্কের চেয়ে তুলনামূলক কার্যকর ও প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন ধর্মী হবে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই এ সম্পর্কে ইঙ্গিত দিয়েছেন।

নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনটি বিষয়কে মোকাবিলা করতে হবে। বিষয় তিনটি হচ্ছে-সরকারের অগ্রাধিকারের প্রধান প্রধান প্রকল্পগুলোতে অর্থায়ন অব্যাহত রাখা; গত সরকারের শেষ ছয় মাসে গণহারে পাস করা প্রকল্পগুলো প্রাধান্যের ভিত্তিতে নির্বাচন করা এবং নতুন সরকারের নতুন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন। আর এগুলো করতে সরকারকে অর্থের সংস্থান করতে হবে। নতুন সরকারের সময়ে এগুলো কতটা নিপুণভাবে সম্পন্ন করা যাবে সেটাই দেখার বিষয়।

সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে উন্নয়নের যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করতে বর্তমান সরকার মেগা যেসব প্রকল্প হাতে নিয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নে গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। তিনি বলেন, কৃষিকে যান্ত্রিককরণ, সরকারকে গ্রামের সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।

দায়িত্ব নেওয়া পর পর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ইঙ্গিত দিয়েছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে বাজেট বক্তৃতা দেওয়া অপ্রয়োজন। বাজেট বক্তৃতা হওয়া প্রয়োজন নির্ভর এবং মানুষ যা জানতে চায় সে রকম। মন্ত্রণালয়ও ইতোমধ্যে পুরনো বাজেটের অপ্রয়োজনীয় অংশ বাদ দিয়ে আগামী বাজেট বক্তৃতা ছোট্ট করার চিন্তা ভাবনা শুরু করেছে। বাজেটের প্রশিক্ষণ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি আন্তঃমন্ত্রণালয় বাজেট বৈঠক শুরু হবে। এর মধ্যে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, কৃষি উন্নয়ন কপোরেশন, রাজশাহী ওয়াসা, ঢাকা ওয়াসা, রেশম উন্নয়ন বোর্ড ও গবেষণা-প্রশিক্ষণ কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম ওয়াসা, খুলনা ওয়াসা, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, সড়ক পরিবহন করপোরেশন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন, বিএসটিআই, টিসিবি, বিআরটিএ, বিডব্লিউটিসি, বিএআরসিসহ সরকারের প্রায় ৫০টি সংস্থার সঙ্গে পরামর্শের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেই সঙ্গে অর্থনীতিবিদ, থিঙ্কট্যাঙ্ক অর্গানাইজেশন ও শ্রেণি-পেশার সংগঠন ও মানুষের সঙ্গেও পরামর্শ করবে। এ পরামর্শের ভিত্তিতে অর্থমন্ত্রীকে সরকারের লক্ষ্য ও কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে হবে।

আগামী বাজেট প্রণয়ন সতর্কতার সঙ্গে করতে হবে বলে মনে করেন বিশ্বব্যাংকের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। আগামী বাজেট চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা নিয়ে মন্তব্য চাইলে খোলা কাগজকে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি মাত্র ৭ শতাংশ। আগামীতে এ হার কেমন হবে তার ওপর নির্ভর করবে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট প্রাক্কলন ও বাস্তবায়ন। পাশাপাশি ঝুলিয়ে রাখা ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন, শুল্ক আইন পাস ও কার্যকর এবং প্রত্যক্ষ কর নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে যে সব কথা বলা হচ্ছে তার বাস্তবায়ন। পাশাপাশি কর প্রশাসনের দক্ষতা ও সংস্কারের প্রয়োজন আছে। সেগুলোও আগামী অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে।

২০২১ সালে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তরের লক্ষ্য নির্ধারিত আছে। এ সময় অভ্যন্তরীণ দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ অর্জন করতে হবে। একই সময়ে দেশজ উৎপাদনে করের অনুপাত ৮-৯ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ১১-১২ শতাংশে পৌঁছতে হবে। এজন্য কর প্রশাসনকে গণমুখী করা, দুর্নীতি দূর করা এবং কর ব্যবস্থাকে অটোমেশন করার তাগিদ দিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। সে ক্ষেত্রে আগামী বাজেট থেকেই সরকারের সক্ষমতা দেখাতে হবে।

 
Electronic Paper