ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে সেবা রপ্তানি

জাফর আহমদ
🕐 ১০:২৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৮, ২০১৮

লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে সেবা রপ্তানি খাত। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫৫ শতাংশ এবং লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি সেবা রপ্তানি হয়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে পণ্য রপ্তানির আয়ের উল্লম্ফনের পর সেবা রপ্তানির এই তথ্য দিল রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো।   

চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সেবা রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৫ বিলিয়ন ডলারের সেবা। জুলাই-সেপ্টেম্বর তিন মাসের কৌশলগত সেবা রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ দশমিক ১২৫ বিলিয়ন ডলার। ৩ মাসে রপ্তানি হয়েছে ১ দশমিক ৪০৬ বিলিয়ন ডলার। ১২ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেশি রপ্তানি হয়েছে। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫৫ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি সেবা রপ্তানি হয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সেবা রপ্তানি হয়েছিল ৯০৬ মিলিয়ন ডলারের সেবা।
মূল রপ্তানি পণ্যের বাইরে থেকে যোগ হওয়া এ সেবা অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, মূলত দক্ষ পেশাজীবীদের আয় হলো এ সেবা রপ্তানি। দক্ষ কর্মজীবী ও মেধাবৃত্তিক সেবা রপ্তানি বাবদ প্রতিবছর প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যোগ হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে আকাশ, নৌ ও রেলপথে সেবা রপ্তানি আয়, তথ্য প্রযুক্তি ও কম্পিউটারভিত্তিক সেবা, বিদেশি জাহাজসহ বিভিন্ন প্রকার প্রযুক্তি সেবা, নির্মাণবিষয়ক সেবা, ব্যবসা ও ব্যক্তিগত সেবা, ব্যাংক ও ইন্স্যুরেন্স সেবা, টেলিকমিউনিকেশননির্ভর সেবাসহ প্রায় ৫০ ধরনের সেবা।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যে দেখা যায়, যোগাযোগ সেবা রপ্তানি করে আয় হয়েছে ১৯০ মিলিয়ন ডলার, ভ্রমণ সেবা বাবদ ৮২ মিলিয়ন ডলার, নির্মাণ বাবদ সেবা রপ্তানি করে আয় হয়েছে ৯২ মিলিয়ন ডলার, ফিন্যান্সিয়াল সেবা রপ্তানিতে ১ মিলিয়ন ডলার, টেলিকমিউনিকেশন সেবা রপ্তানি আয় ১৫০ মিলিয়ন ডলার, ব্যক্তিগত ও সাংস্কৃতিক সেবা ৭ মিলিয়ন ডলার, বিদেশি সরকারি সেবা বাবদ আয় হয়েছে ৫৬১ মিলিয়ন ডলার।
গত মাসে পণ্য রপ্তানি আয়ে দেখা গেছে আগের বছরের চেয়ে প্রায় ১৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক রপ্তানিতে আয় হয়েছে ২০ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। জুলাই-অক্টোবর চার মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে আয় হয়েছে ১১ দশমিক ৩৩৩ বিলিয়ন ডলার। এ সময়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ১৬৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তৈরি পোশাক রপ্তানিকে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩২ দশমিক ৬৮৯ বিলিয়ন ডলারের। ২০১৭-১৮ বছরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ছিল ৩০ দশমিক ৬১৪ বিলিয়ন ডলারের।  
তৈরি পোশাক রপ্তানিতে নানামুখী উদ্যোগের ফলে রপ্তানি বেড়েছে বলে মনে করেন তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহ-সভাপতি ফারুক হাসান। রপ্তানি বৃদ্ধিতে সরকারের প্রণোদনা, রপ্তানিতে বাজার খুঁজে বের করা, চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের পোশাকের চাহিদা বৃদ্ধি এবং উচ্চমূল্যের তৈরি পোশাক রপ্তানির দিকে মনোযোগ দেওয়ার কারণে রপ্তানি বেড়েছে।
মূল রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধির পাওয়ার কারণে আনুষঙ্গিক রপ্তানি হিসাবে সেবার রপ্তানি বেড়েছে বলে মনে করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. ইয়াসিন আলী। তিনি বলেন, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ সেবা, ট্রাভেল, টেলিকমিউনিকেশন সেবা, মেধাস্বত্ব রপ্তানি বৃদ্ধি পায়। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এটা বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি ইতিবাচক ভঙ্গি।

 
Electronic Paper