ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রাজস্ব আদায় স্বাভাবিক

জাফর আহমদ
🕐 ১০:২০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১১, ২০১৮

নির্বাচনী হাওয়া বইছে দেশে। এরই মধ্যে রাজস্ব আদায় কার্যক্রম এগিয়ে চলছে স্বাভাবিকভাবেই। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রাজস্বের তিন অংশের মধ্যে ভ্যাট আদায় কিছুটা কম হলেও শুল্ক ও আয়কর আদায় সমান গতিতে এগিয়ে চলেছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-সেপ্টেম্বর তিন মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৫ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে রয়েছে আমদানি ও রপ্তানি পর্যায়ে শুল্ক, স্থানীয় পর্যায়ের ভ্যাট এবং আয় ও ভ্রমণ কর। আদায়কৃত এ রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হলেও গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫ দশমিক ২২ শতাংশ বেশি।

জুলাই-সেপ্টেম্বর তিন মাসের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৭ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে আদায় হয়েছে ৪৫ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা। ২০ শতাংশের অধিক ঘাটতি রয়েছে। রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, আমদানি ও রপ্তানি পর্যায়ে শুল্কে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯ হাজার ১৫০ কোটি টাকা; আদায় হয়েছে ১৫ হাজার ১৫৮ কোটি টাকা। স্থানীয় পর্যায়ের ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা; আদায় হয়েছে ১৭ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা। আয়কর ও ভ্রমণ করে ১৫ হাজার ৯২০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ১৩ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা।

তিন মাসে তুলনামূলক কম আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ে মূসক বা ভ্যাট। রাজধানীর ব্যবসায়ীদের চাপের মুখে বন্ধ হয়ে যায় নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর। এরপর পুরাতন ভ্যাট আইনের পাশাপাশি আংশিকভাবে চালু করা হয়েছে নতুন ভ্যাট আইন। এ কারণে ভ্যাট আদায় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে কি না-এমন প্রশ্ন খোদ রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের। তবে ব্যবসায়ীরা এটাকে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বলে মনে করেন।

এ বিষয়ে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহ-সভাপতি ও দোকান মালিক সমিতির নেতা মো. হেলাল উদ্দিন খোলা কাগজকে বলেন, ভ্যাট আইন কার্যকর করা নিয়ে রাজধানীর ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ করলেও ভ্যাট আশানুরূপ আদায় না হওয়ার পেছনে তাদের কোনো হাত নেই। কারণ বছরে যে পরিমাণ ভ্যাট আদায় হয় তার অতি সামান্য দেন দেশের সাধারণ ব্যবসায়ীরা। আর প্রায় পুরোটাই দেয় দেশে কর্মরত বহুজাতিক কোম্পানি এবং দেশীয় বড় বড় কোম্পানি। ভ্যাট কম আদায়ের জন্য যদি করদাতাদের হাত থেকে থাকে, তাহলে তা জানে এসব বড় বড় কোম্পানি। ভ্যাট আইন কার্যকরে যারা বিরোধিতা করেছিল দেশের সেই দোকানদারদের কোনো হাত নেই।

চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা আছে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআর আদায় করবে ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা। এনবিআরবহির্ভূত রাজস্ব ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। এনবিআরের কর্মকর্তাদের মতে, বাজেটে প্রাক্কলিত রাজস্ব পেতে হলে এনবিআরের মাধ্যমে জুলাই-সেপ্টেম্বর তিন মাসে আদায় করার কথা রয়েছে ৫৭ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। আর আদায় হয়েছে ৪৫ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ শতাংশের কম। সে হিসাবে রাজস্ব আদায়ের নেতিবাচক ধারা সূচিত হয়েছে।

তবে নির্বাচনী বছর বিবেচনা করলে এবং আগের বছরের রাজস্ব আদায় বিবেচনায় নিলে রাজস্ব আদায় স্বাভাবিক আছে। অর্থবছরের বাকি মাসগুলোর আদায় হলে লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 
Electronic Paper