ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মানবতার দৃষ্টান্ত রেখে চলেছেন ডা. নুরুল্লাহ আল মাসুদ

খন্দকার শাহিন, নরসিংদী প্রতিনিধি
🕐 ৬:০৬ অপরাহ্ণ, মে ১৫, ২০২১

মানবতার দৃষ্টান্ত রেখে চলেছেন ডা. নুরুল্লাহ আল মাসুদ

ডা. নুরুল্লাহ আল মাসুদ ২০১০ সালে নরসিংদী ডায়বেটিকস এন্ড জেনারেল হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার হিসেবে যুক্ত হন। এক বছরেরই তিনি সহকর্মী ডাক্তারদের প্রিয় হয়ে ওঠেন। হাসপাতালের ডাক্তাদের বিভিন্ন সমস্যায় তিনি নিবেদিত প্রাণ। যে কারও সমস্যায় ভরসার জায়গা ডাক্তার মাসুদ। ৬ বছরের মধ্যে হাসপাতালে সিনিয়র মেডিকেল অফিসার হিসেবে পদোন্নতি হয় তার। করোনকালীন সময়ে মানবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। রোগীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রয়োজনীয় সেবা দিয়েছেন তিনি। হতদরিদ্র রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি নিজ পকেটের টাকা দিয়ে প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়েছেন এ মানব প্রেমিক। তাই তো নিম্ন আয়ের রোগীর কাছে তিনি মানবতার প্রতীক।

হাসপাতালে ডাক্তার নুরুল্লাহ আল মাসুদের সহকর্মীর সাথে কথা বলে জানা যায়, গ্রামগঞ্জ থেকে আসা হতদরিদ্র অনেক রোগীদের তিনি নিজ পকেটের টাকা দিয়ে চিকিৎসা করান এবং মাঝে মাঝে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা করে থাকেন। গভীর রাতেও তিনি রোগীদের ফোন ধরেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করেন। শুধু তাই নয়, করোনায় খেটে খাওয়া প্রায় শতাধিক পরিবারের পাশে খাদ্যসামগ্রী ও প্রয়োজনীয় ওষুধ নিয়ে হাজির হন ডাক্তার নুরুল্লাহ আল মাসুদ।

সহকর্মীরা আরও জানান, নুরুল্লাহ আল মাসুদ নরসিংদী ডায়বেটিক এন্ড জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র মেডিকেল কর্মকর্তা। তার বাবা মোঃ নিজাম উদ্দিন ছিলেন সাটির পাড়া কে. কে. ইনস্টিটিউটের সহকারী শিক্ষক। দুই ভাই বোনের মাঝে মাসুদ বড়। ছোটবেলা থেকে শিক্ষক বাবা ও মায়ের তীব্র ইচ্ছে ছিল ছেলেকে ডাক্তার বানাবেন। বাবা মার ইচ্ছে অনুযায়ী তার ডাক্তারি পেশায় আসা। শিক্ষক বাবার একটাই ইচ্ছে ছেলে ডায়াবেটুলজিস্ট হিসেবে কাজ করবে। অন্য কোনো ডিপার্টমেন্টে নয়।

তারা আরও জানান, নরসিংদী বেলাব উপজেলার সাল্লাহ গ্রামের এক কিশোর দীর্ঘদিন যাবত ডায়বেটিকে সমস্যায় ভুগছেন, তার বাবা একজন কৃষক। কৃষক বাবার পক্ষে নরসিংদীতে এসে ছেলেকে চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। বিষয়টি মাসুদের কাছে আসলে তিনি গরিব কৃষকের ছেলের চিকিৎসার দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন। নিজ পকেটের টাকা দিয়ে প্রায় পাঁচ বছর ধরে চিকিৎসা করাচ্ছেন ছেলেটিকে। মাঝে মাঝে নিজের ব্যবহৃত গাড়ি অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে গরিব রোগীদের সেবায় বিলিয়ে দেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে যেখানে মানুষ ডাক্তারদের নিয়ে নানা নেতিবাচক কথা বলেন সেখানে ডাক্তার নুরল্লাহ আল মাসুদ সত্যিই মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

সাহেপ্রতাব মহল্লার আমেনা বেগম বলেন, আমি নরসিংদী ডায়বেটিক হাসপাতালে যাই চার-পাঁচ বছর ধরে। তখন থেকে আমার স্যারের সাথে পরিচয়। স্যার সব সময় আমাকে একটু্ বেশি সময় করে দেখতেন ও প্রয়োজনীয় সেবা দিতেন। হঠাৎ করোনায় লকডাউনে আমি অনেকটা চিন্তিত হয়ে পড়ি। কীভাবে হাসপাতালে যাব। স্যারের সাথে ফোনে কথা বলি। পরদিন সকালে স্যার প্রয়োজনীয় ওষুধ নিয়ে বাসায় হাজির হন। স্যারের মতো মানুষ হয় না। আল্লাহ স্যারকে নেক হায়াত দান করুন।

ডা. নুরুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, জীবনের শেষ সময়টুকু পর্যন্ত নিজেকে মানবসেবায় বিলিয়ে দিতে চাই।

 
Electronic Paper