ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মাদারীপুরের রাজৈরে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত

মাদারীপুর প্রতিনিধি
🕐 ৪:৫৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৪, ২০২০

বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে মাদারীপুরের রাজৈর মুক্ত দিবস পালন করা হয়েছে। সকালে রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রশাসক রাজৈর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের উদ্যোগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার বেদীতে পুষ্প স্তবক অর্পণ করা হয়।

পুষ্প স্তবক অর্পণ অনুষ্ঠানে রাজৈর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেজওয়ানা কবির, রাজৈর উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. সেকান্দার আলী সেখ, সংসদ সদস্য প্রতিনিধি আফম ফুয়াদসহ উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কমলাপুর, পাখুল্যা, লাউসর, কদমবাড়ি, মহিষমারী, ইশিবপুর ও কবিরাজপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১৭টি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর সাথে লড়াই শুরু করে। রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়নের কমলাপুর সর্বেস্বর বৈদ্যের বাড়ি খলিল বাহিনীর প্রধান খলিলুর রহমান খানের নেতৃত্বে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে যুদ্ধ পরিচালনা করেন।

এখানকার মুক্তিযোদ্ধারা মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস করে দেয় এবং মুক্তিযোদ্ধারা একের পর এক পাকবাহিনীকে পরাস্ত করে দেশ মাতৃকাকে পুনরুদ্ধারের দিকে এগিয়ে যায়।

রাজৈরে অবস্থান নেওয়া মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদরদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুরের রাজৈর বড় ব্রীজ, আমগ্রাম ব্রীজ ও টেকেরহাট এলাকায়। এর মধ্যে বৌলগ্রাম, রাজৈর থানা ও পাখুল্যায় মুখোমুখি যুদ্ধ হয়। এখানে অংশগ্রহণ করেন সাবেক রক্ষীবাহিনীর ডেপুটি ডিরেক্টর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব.) সরোয়ার হোসেন মোল্যা। সকাল ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত একটানা যুদ্ধ চলে।

দেশ যখন বিজয়ের দিকে এগিয়ে চলছে, ঠিক সেই মুহুর্তে পাকবাহিনী ও তাদের দোসরা মারমুখী হয়ে মুক্তিকামী মানুষের উপর হায়েনার মত ঝাঁপিয়ে পড়ে নিধনযজ্ঞ শুরু করে। মুক্তিযোদ্ধারাও পাকবাহিনী ও দোসরদের চতুর্দিক ঘিরে ফেলে যুদ্ধ চালাতে থাকে। নয় মাসের যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রায় সাড়ে তিনশত মানুষ শহীদ হন। মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় পর্যুদস্ত পাক হানদার বাহিনী মাদারীপুরের রাজৈর থানা থেকে পালিয়ে পাশের জেলা গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের ছাগলছিড়া নামক এলাকায় চলে যায় এবং সেখানে ১৩৫ জন পাক হানাদার বন্দী হয়। মুক্ত হয় রাজৈর উপজেলা।

রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রশাসক রাজৈর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড মো. আনিসুজ্জামান জানান, বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের কারনে রাজৈর মুক্ত দিবসের অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়। সকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তুবক অর্পণ করা হয়।

 
Electronic Paper