ভাই-ভাবি-ভাতিজাকে হত্যার পর মাটি চাপা, দায় স্বীকার করেছে ভাই!
কিশোরগঞ্জ ও কটিয়াদী প্রতিনিধি
🕐 ৭:০৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩০, ২০২০
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বাবা-মাসহ এক সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর তাদের মৃতদেহ একই সঙ্গে একটি গর্তে পুতে রাখা হয়। এ কাজগুলো নিহতের ছোট ভাই দ্বীন ইসলাম একাই করেছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে বলে জানা গেছে। চাঞ্চল্যকর এ হত্যার ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। তবে এ ঘটনায় যদিও এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত আসাদের ভাই, দুই বোন ও এক বোনের স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ট্রিপল মার্ডারের দায় স্বীকার করেছে নিহতের ভাই দীন ইসলাম। জমি নিয়ে পারিবারিক বিরোধের জের ধরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
এর আগে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার জামসাইট গ্রামে গত বৃহস্পতিবার রাতে বসত ঘরের পাশে মাটি চাপা দেয়া স্বামী, স্ত্রী ও তাদের ১২ বছরের শিশু পুত্রের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, কটিয়াদী উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের জামসাইট গ্রামের মৃত মীর হোসেনের ছেলে নিহত ব্যবসায়ী আসাদ মিয়ার সঙ্গে তার ছোট ভাই দীন ইসলামের বাড়ির জমি নিয়ে বিরোধ ছিল।
বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের জামষাইট গ্রামে বসত ঘরের পাশে মাটি চাপা দেয়া অবস্থায় আসাদ মিয়া (৫২), তার স্ত্রী পারভিন আক্তার (৪০) ও তাদের শিশুপুত্র লিয়নের (১২) মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
দ্বীন ইসলাম জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশকে জানায়, জমিজমা ও পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে তিনি একাই তিনজনকে হত্যা করেছেন। বুধবার রাত ১টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় শাবল দিয়ে বড় ভাই আসাদকে হত্যা করার পর ভাবি আসমা আক্তার ও ভাতিজা লিওনকে হত্যা করে। পরে ঘরের পাশেই একটি গর্ত খুঁড়ে প্রথমে গর্তে ভাই আসাদ পরে ভাবী এবং ভাতিজাকে রেখে মাটি চাপা দিয়ে রাখে।
নির্মম এ ঘটনাটি তিনি একাই ঘটিয়েছে বলে দায় স্বীকার করলেও পুলিশ অধিকতর তদন্তের স্বার্থে আটক অন্যান্যদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্ত অব্যাহত রেখেছেন।
এদিকে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে শুক্রবার নিহত তিনজনের ময়নাতদন্তের কাজ শেষে নিহতের বড় ছেলে তোফাজ্জল হোসেনের কাছে বুঝে দেন। এ সময় তিনি জানান জানাজার নামাজ ও দাফনের পর মামলা দায়ের করবেন।
কটিয়াদী মডেল থানার ওসি এম এ জলিল জানান, এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, ধারণা করা হচ্ছে পূর্ব পারিবারিক বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। তাই এ ঘটনায় নিহত আসাদের ভাই দ্বীন ইসলাম, দুই বোন নাজমা ও তাসলিমা এবং তাসলিমার স্বামী ফজলু মিয়াকে আটক করা হয়েছে। একই সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসাদের মাকেও থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা হবে বলেও তিনি জানান।
তিনি আরও জানান, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দ্বীন ইসলাম একাই শাবল দিয়ে তিনজনকে হত্যা করে মাটিচাপা দিয়ে রাখে বলে শিকার করেছে। আরও তদন্ত চলছে।