ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আন্তর্জাতিকমান অর্জন করতে যাচ্ছে নাসিক

মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ, নারায়ণগঞ্জ
🕐 ৯:১৪ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৭, ২০২০

আন্তর্জাতিকমানে পৌঁছতে চলেছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক)। জাতিসংঘের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইউএন হ্যাবিট্যাটও বলছে সে কথা। সংস্থাটির মানদ- অনুযায়ী, আদর্শ নগরীর ৪৫ শতাংশ উন্মুক্ত স্থান (গণপরিসর) থাকার কথা। সেই মানদ-ের খুব কাছাকাছি নাসিক। সিটি পরিষদের এ মেয়াদে হাতে নেওয়া প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলেই অর্জিত হবে লক্ষ্য। নারায়ণগঞ্জ পৌঁছে যাবে আন্তর্জাতিকমানে। ইতিমধ্যে দখল হয়ে যাওয়া জমি ও খাল উদ্ধারে নেমেছে তারা। এর আগে শেখ রাসেল পার্ক ও বাবুরাইল খাল প্রকল্পকে এশিয়ান টাউনস্ক্যাপ অ্যাওয়ার্ড-২০১৬ অর্জন করেছে নাসিক। চীন জাপানসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের ৪১টি প্রকল্পের মধ্যে এ প্রকল্পটি জুরি অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে।

জানা যায়, ২০১১ সালের ৫ মে বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জকে যুক্ত করে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন গঠন করা হয়। বর্তমানে এর আয়তন ৭২.৪৩ কিলোমিটার। করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডে ৩১৪.৪৩ একর ভূমিতে প্রায় ২০ লাখ লোকের বসবাস। সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, সড়ক, পার্ক, লেক ও নদীর পাশ দিয়ে নির্মিত ওয়াকওয়ে গণপরিসর বা পাবলিক প্লেসের আওতায় পড়েছে। ঘনবসতির এই নগরীতে নতুন করে বাড়ছে ভবন কমছে উন্মুক্ত স্থান। ফলে দিন দিন গণপরিসর কমার সম্ভাবনাও বাড়ছে। এ কারণেই খালি জায়গা বাড়ানোর জন্য দখল হয়ে যাওয়া খাল ও জমি উদ্ধারে নামে সিটি করপোরেশন। সিটি করপোরেশনের ৩১৪.১৪ একর ভূমি রয়েছে। ইউএন হ্যাবিট্যাটের মানদ- অনুযায়ী ওই ভূমি অনুপাতে প্রায় ১২৫ একর জমি গণপরিসর থাকতে হবে। সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জের গণপরিসরে ৬০৯ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার সড়ক ও ফুটপাত রয়েছে। সড়ক, ফুটপাত ও অন্যান্য গণপরিসর বাদ দিলে আদর্শ সিটি গড়তে খালগুলোর জমি যুক্ত হলেই সে লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে সিটি করপোরেশন।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, সিটি এলাকায় ২৮টি খাল রয়েছে। যার প্রায় সবগুলোই দখল-দূষণের শিকার। তবে ইতোমধ্যে ৬টি খাল উদ্ধার করে সেখানে উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। মোটা দাগে নগরীর দেওভোগ-বাবুরাইল খাল ও জমি উদ্ধার সিটি করপোরেশনের বড় সাফল্য। এ প্রকল্পেই গণপরিসরে যুক্ত হয়েছে ১৬ একর। ২৮টি খাল উদ্ধার হলে কমপক্ষে অর্ধশত একরের বেশি গণপরিসরে যুক্ত হবে। এছাড়াও নগরীর প্রাণকেন্দ্র আলী আহমেদ চুনকা সড়কের রহমতউল্লাহ মুসলিম ইনস্টিটিউট ভবন ভেঙে সেখানে অবসরকেন্দ্র করা হয়েছে। নগরীর প্রায় ৮টি ওয়ার্ডে দখল করে থাকা সড়কের জমি উদ্ধার করে সড়ক বড় করা হয়েছে। সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলীর অবসর কেন্দ্র। নগরীর নলুয়াপাড়া ও বন্দরের সোনাকান্দা কেল্লা হতে মাহমুদপুর পর্যন্ত সড়ক দুটি নগরবাসীর চোখে অবস্মরণীয় ঘটনা।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ মো. মঈনুল ইসলাম জানান, মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী দ্বিতীয় মেয়াদেই আদর্শ সিটি করপোরেশন গড়ার ক্ষেত্রে গণপরিসর উন্নয়ন ও সংরক্ষণের ওপর নজর দেন। ভৌত-অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ বাসযোগ্য নগরী গঠনে এ উদ্যোগ সুদূরপ্রসারী।

মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, আমরা নগরবাসীকে একটি বাসযোগ্য আধুনিক নগরী উপহার দিতে চাই। সিটি করপোরেশন একটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ নিয়ে এগুচ্ছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে নারায়ণগঞ্জ হবে এশিয়ার অন্যতম পরিকল্পিত শহর। তিনি বলেন, চাইলে অনেক উন্নয়ন কাজ করা যায়। কিন্তু গণপরিসরে নতুন জমি যোগ করা অনেক কঠিন কাজ ছিল। কিন্তু এ কাজে নগরবাসী আমাদের পাশে ছিল। ভবিষ্যতেও থাকবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।

 
Electronic Paper