শালুক কুড়ানো জীবন
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
🕐 ১১:১১ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২০
বর্ষার মৌসুম দুর্বিষহ তাদের জন্য। হাতে থাকে না কাজ। অভাব-অনটন লেগেই থাকে। এ সময় শাপলা-শালুক কুড়িয়েই চলে তাদের জীবন। বর্ষার সময় মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানের নিম্নবিত্ত পরিবারে এই দৃশ্য প্রতি বছরের।
এ বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে হয়ে উঠেছে আরও দুর্বিষহ। পরিত্রাণের পথ খুঁজলেও মিলছে না যেন।
সরেজমিন দেখা যায়, নিম্নবিত্ত নারী ও পুরুষরা সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত খাল-বিল ও বিস্তীর্ণ জমিতে জন্মানো শাপলা ফুলের শালুক কুড়িয়ে নৌকায় করে নিয়ে আসেন বিভিন্ন হাট-বাজারে। সেই শালুক খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে। মান বিচারে বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৫০ থেকে ৭০ টাকা দরে। পাইকারি দরে অনেক কম। স্থানীয়দের পাশাপাশি এই শালুক চলে যাচ্ছে ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায়।
স্থানীয় বাজারে শালুক বিক্রেতা মনির, সাদ্দাম, বলেন, সারা দিনে ১০ থেকে ১৫ কেজি শালুক কুড়িয়ে আনতে পারেন তারা। পানির মধ্যে অনেক বিপদআপদকে তুচ্ছ করে পেটের তাগিদে এগুলো সংগ্রহ করেন তারা। সেগুলো বাজারে নিয়ে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি করতে পারেন। সে টাকা নিয়ে অনেক কষ্টে সংসার চলে। হোসনে আলী বলেন, আমাদের মতো গরিবদের প্রতি বর্ষায় এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। হাতে কোনো কাজ থাকে না। শালুক সংগ্রহ করেই কষ্টে জীবিকা চালাই।
শালুক ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবীর বলেন, ৫০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে শালুক। এলাকার নিম্নবিত্ত ছেলেপেলেরা ও মহিলারা আমাদের কাছে বিক্রি করেন। তাদের কাছ থেকে কিনে আবার কখনো কখনো বাইরে থেকে কিনে এনেও বিক্রি করি।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. শাফীয়ার রহমান বলেন, উপজেলার আনাচে-কানাচে বিক্রি শালুক হতে দেখেছি। শাপলা ও শালুক বৈশিষ্ট্য নিরাপদ সবজি কীটনাশক ও রাসায়নিক সারমুক্ত।
এই বিষয়টি একটা গুরুত্ব আছে। পাশাপাশি সিরাজদীখানসহ মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা বাণিজ্যিক হিসেবে শাপলা ও শালুক বিক্রি হচ্ছে। প্রাকৃতিক এই শালুক সংগ্রহ ও বিক্রির মাধ্যমে অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করতে পারছেন।