ঢাকা, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ঘুরে না চাকা, জ্বলে না চুলা

রাকিব হাসান জিল্লু, সাভার
🕐 ২:১৭ অপরাহ্ণ, মে ২৬, ২০২০

পরিবহনের চাকা ঘুরলে এর সঙ্গে জড়িত শ্রমিকদের জীবনের চাকাও ঘোরে। তবে করোনা ঠেকাতে সরকারি ছুটির মধ্যে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় তাদের জীবনে নেমে এসেছে অচলাবস্থা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের গণপরিবহন। এতে বিপাকে পড়েছেন সাভার ও আশুলিয়ার শ্রমিকরা।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে গত ২৬ মার্চ থেকে দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় বাস, মিনিবাস, লেগুনাসহ সব ধরনের যাত্রীবাহী যানবাহন। এতে করে বিপদে পড়েন সাভার ও আশুলিয়ার প্রায় তিন হাজার শ্রমিক।

সরেজমিনে ঘুড়ে দেখা যায়, সাভারে হেমায়েতপুর, রাজফুলবাড়িয়া, সাভার বাসস্ট্যান্ড, আশুলিয়ায় বাইপাইল, শ্রীপুর, জিরানী, চক্রবতী, নবীনগর, বিশমাইল কাউন্টার বন্ধ। অধিকাংশ কাউন্টারই বলতে গেলে ফাঁকা। অলস সময় পার করছে পরিবহন কাউন্টার শ্রমিকরা।

মনির হোসেন নবীনগরে দেশ ট্রাভেলস, আল-হামরা পরিবহন, ডিপজল পরিবহন কাউন্টার পরিচালনা করেন।

তিনি বলেন, আমি বছর খানেক হলো কাউন্টার পরিচালনা করি। কিন্তু আমরা অনেক বিপাকে পড়ে গিয়েছি। ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশ ট্রাভেলস পরিবহন। পর্যায়েক্রমে আল-হামরা ও ডিপজল পবিবহন বন্ধ হয়ে যায়। সরকারের পক্ষে থেকে বাংলাদেশের সব খাতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু আমাদের দেখার কেউ নেই। অনেক জায়গায় চেয়ারম্যানরা ত্রণ দিয়েছে আমাদের কেউ ত্রাণ দেয়নি।

হতাশা প্রকাশ করে শাহাবুল নামের কাউন্টার মাস্টার বলেন, কি করোনা আইল, কাজকাম বন্ধ। কোনোভাবে খাইয়া, না খাইয়া আছি। দুই দিনের বাজার আছে। তারপর বউ বাচ্চা নিয়া কি খামু? ক্যাম্পে কারও থেকে ধার নিমু সে সুযোগও নাই। যারা কাজ করে, সবার একই অবস্থা। কারও কাছে হাত তো পাততে পারি না ভাই। আমরা কাজ করার লোক। প্রতিদিন যা কমিশন পাইতাম টিকেট বিক্রি করে তা নিয়ে দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে কোনো রকম সংসার চলে যেত। এখন তো সবকিছু বন্ধ। তার মধ্যে দিতে হবে ঘড় ভাড়া এসব চিন্তায় রাতেও ঘুম আসে না।

আশুলিয়া সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি লায়ন ইমাম হোসেন জানান, দেশের পরিবহন খাতে নিয়োজিত মানুষগুলো মূলত পুরোটাই যানবাহন চলাচলের উপর নির্ভরশীল। একদিন বন্ধ থাকলেও তাদের জীবিকা নির্বাহ করা খুবই মুসকিল। স্থানীয়ভাবে কয়েকজন ত্রাণসামগ্রী পেলেও তা অপ্রতুল। সরকার ও পরিবহন নেতাদের এ বিষয়ে দায়িত্ব নেওয়া উচিত। গণপরিবহন বন্ধের নোটিশের পাশাপাশি তাদের জীবিকা নির্বাহের বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি।

 
Electronic Paper