সিরাজদিখান থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখী
সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি
🕐 ১:১৫ অপরাহ্ণ, মে ২০, ২০২০
গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বিজ্ঞান সম্মত চেতোনাবোধের অধিকারী ও দক্ষ কারিগর বাবুই পাখী ও তাদের বাসস্থান এখন আর আগের মত চোখে পরে না। পরিবেশ বিপর্যয়, নির্বিচারে তালগাছ কর্তন, অসাধু শিকারীদের ফাঁদের কারণে কালের আবর্তে প্রকৃতির স্থপতি, সামাজিক বন্ধনের প্রতিচ্ছবি বাবুই পাখি ও এর দৃষ্টিনন্দন বাসা ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। প্রায় ৮-১০ বছর আগেও গ্রামগঞ্জে ব্যাপক ভাবে বাবুই পাখি ও এর বাসা চোখে পড়ত।
কিচির মিচির শব্দে মুখরিত থাকতো চারিপাশ। প্রকৃতির অপার বিস্ময় এদের সেই ঝুলন্ত বাসা বাড়ির তালগাছসহ নদীর পাড়ে, পুকুর পাড়ে, বিলের ধারে এখন আর সচরাচর চোখে পরে না। আগের মতো বাবুই পাখির কিচির মিচির শব্দে মুখরিত হয় না গ্রাম অঞ্চলের জনপদ।
নিরীহ, শান্ত প্রকৃতির এই বাবুই পাখি উচু এবং নিরিবিলি পরিবেশে বাসা তৈরি করতে পছন্দ করে। তাল, সুপারি, নাড়িকেল ও খেজুর গাছে বাসা তৈরি করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে বাবুই পাখি। এসব গাছের সংকটে মাঝে মাঝে আখক্ষেত বা হিজল গাছেও বাসা বাধতে দেখা যায় এদের। এই পাখি বাসা তৈরির কাজে ব্যবহার করে থাকে খড়ের ফালি, ধানের পাতা, তালের কচি পাতা, ঝাউ ও কাঁশবনের লতা। চমৎকার আকৃতির এই বাসা বিশেষ করে তাল গাছের ডালে এমনভাবে সাটানো থাকে যাতে কোনো ঝড়-তুফানে সহসাই ছিড়ে না পড়ে। এদের বাসা শুধু শৈল্পিক নিদর্শনই নয়, মানুষের মনে চিন্তার খোরাক জোগায় এবং স্বাবলম্বী হতে উৎসাহিত করে।
এক সময় সিরাজদিখান উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে দেখা যেতো অগণিত বাবুই পাখির বাসা। উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরেও এখন আর দৃষ্টি নন্দন বাবুই পাখির ঝুলন্ত বাসা আগের মতো চোখে পরে না। তবে সিরাজদিখান উপজেলার কোলা ইউনিয়নের রক্ষিতপাড়া গ্রামে তিনটি, রশুনিয়া ইউনিয়নের চোরমর্দ্দন গ্রামে দুটি ও সিরাজদিখান বাজার সমবায় মার্কেট সংলগ্ন একটি গাছে বাবুই পাখির বাসা দেখা যায়।
সিরাজদিখান প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ হাসান আলী বলেন, পরিবেশ থেকে তালগাছ হারিয়ে যাচ্ছে। তাই বাবুই পাখিও হারিয়ে যচ্ছে।
সিরাজদিখান বন ও পরিবেশ বিষয়ক কর্মকর্তা মো. সেলিম জানান, তালগাছ বড় হতে অনেক সময় লাগে। অনেক সময় বজ্রপাতে তালগাছ মরে যায়। সময় বেশী লাগে বলে কেউ আর এই গাছ লাগায় না। আর বাবুই পাখি তালগাছ ছারা বাসাও বাধে না। তাই এখন বাবুই পাখির সংখ্যা অনেক কমে গেছে।