ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নাব্য সংকটে পাঁচ নদী

নিত্যানন্দ হালদার, মাদারীপুর
🕐 ১:৪৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২০

পদ্মা, আড়িয়াল খাঁ, কুমার, কীর্তিনাশ ও পালরদি নদী সংস্কার ও পুনঃখননের অভাবে প্রায় ২০০ মাইল নৌপথ শুকিয়ে গেছে। এতে মাদারীপুর ও শরীয়াতপুর জেলার ৫০টিরও অধিক নৌবন্দর অচল হয়ে পড়েছে। শুকিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে পাঁচ শতাধিক ছোট বড় খাল। যার কারণে এখানকার ব্যবসা-বাণিজ্যে যেমন ভাটা পড়েছে, তেমনি সেচ সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছে ৭০ হাজার হেক্টর জমি। আর বেকার হয়ে পড়েছেন ১০ হাজার মাঝি। নদ-নদীতে ডুবোচর ও পানি অস্বাভাবিকভাবে হ্রাস পাওয়ায় মাদারীপুর-শরীয়াতপুরের নৌপথগুলো হুমকির মুখে পড়েছে।

চরমুগরিয়া ও পালংয়ের আঙ্গারিয়া নদী বন্দর দুটি এককালে নৌ-বাণিজ্যের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। বর্তমানে বন্দর দুটো অচল হয়ে পড়েছে। এছাড়াও আড়িয়াল খাঁ, কুমার ও কীর্তিনাশার প্রায় ৫০ ভাগ নৌপথ শুকিয়ে চর জেগে উঠায় নদীপাড়ে গড়ে উঠেছে জনবসতি। প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে নদ-নদীর উৎসমুখে ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় ক্রমেই নদীগুলো শুকিয়ে বালুচরে পরিণত হয়। এ কারণে মাদারীপুর, শরীয়াতপুর ও গোপালগঞ্জের সঙ্গে ফরিদপুর জেলার নৌ-যোগাযোগ অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গেছে।

বর্তমানে লক্ষ্মীপুর, জয়নগর, লাউখোলা, ক্রোকেরচর, চান্দেরহাট, উৎরাইল, দত্তপাড়া, ধুরাইল, সিকদারহাট, আঙ্গারিয়া, খাসেরহাট, বিদ্যাবাগিশ, রাজগঞ্জ, শেখপুর, ঘরিষার, ভোজেস্বর, শৌলপাড়া, বুড়িরহাট, মাদবরেরচর, টেকেরহাট, শ্রীনদী, কবিরাজপুর, কাচারীঘাট, জোয়ারের বাঁওর এলাকাসহ প্রায় ১০০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে জেগে উঠেছে চর। প্রায় ৫০ মাইল দীর্ঘ কুমার নদ ভরাট হয়ে যাওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসাকেন্দ্র চরমুগরিয়া বন্দর, টেকেরহাট বন্দর, রাজৈর, কবিরাজপুর, শ্রীনদী, উৎরাইল, বরহামগঞ্জ, মাদবরেরচর, খাসেরহাট ফাঁসিয়াতলা, শেখপুর ও গোপালপুর ব্যবসাকেন্দ্র বন্ধের উপক্রম।

এদিকে মাদারীপুর সদর ও রাজৈর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কুমার নদের ১৮ কিলোমিটার নদী পুনঃখনন করা হলেও উৎস মুখ ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি প্রবাহ বন্ধ রয়েছে। এতে ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের দক্ষিণাঞ্চল, সদর, রাজৈর ও গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার আংশিক এলাকার প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমি সেচ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে অচল হয়ে পড়েছে পাঁচটি লক গেট।

১৯১২ সালে ব্রিটিশ সরকার সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল, সদর উপজেলার আংশিক, কোটালীপাড়ার আংশিক ও গোপালগঞ্জ সদরের ৮০ হাজার একর জমির সেচ সুবিধার জন্য এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে তৎকালীন কুমার নদের উৎসমুখে পাঁচটি লকগেট নির্মাণ করে। কুমার নদ পুনঃখনন করা হলেও পানি প্রবাহ না থাকায় লক গেটগুলো অচল হয়ে পড়ে।

অন্যদিকে শিবচরের আড়িয়াল খাঁর মুখ ভরাট হয়ে যাওয়ায় বরহামগঞ্জ ও উৎরাইল বন্দর আজ মৃতপ্রায়। আড়িয়াল খাঁ ও কুমার নদে ডুবোচর জেগে উঠায় এবং ভরাট হয়ে যাওয়ায় টেকেরহাট-ঢাকা এবং টেকেরহাট-খুলনা লঞ্চ যোগাযোগ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে।

 

 
Electronic Paper