ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ময়লার ভাগাড় শীতলক্ষ্যা

মাহবুব আলম প্রিয়, রূপগঞ্জ
🕐 ২:৫৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০

নারায়ণগঞ্জের ভূ-ভাগের মধ্যভাগে প্রবাহমান শীতলক্ষ্যা যেন ময়লার ভাগাড়। নদীর দুই তীরের হাট-বাজার, কলকারখানা ও মানববর্জ্য প্রকাশ্যে ফেলা হচ্ছে নদীতে। সবচেয়ে ভয়াবহ পরিবেশ রূপগঞ্জের কাঞ্চন পৌর এলাকায়।

স্থানীয় শিল্প-কারখানা, হাটা-বাজারের সৃষ্ট ময়লা আবর্জনা সরাসরি নদীর পাড়ে রাখা হয়েছে। আর এসব ময়লা গড়িয়ে পড়ছে নদীতে। এতে রূপ নিয়েছে ময়লা ভাগাড়ে। 

অভিযোগ রয়েছে, রাত হলেই এসব ময়লা বেকু দিয়ে নদীতে ফেলার। এতে নদীর পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে। হুমকির মুখে পড়েছে নদীর জীববৈচিত্র্য। এসব ময়লার কারণে নদীর পানিতে পঁচা দুর্গন্ধের জন্য আশাপাশের জনবসতি হয়ে পড়েছে অতিষ্ঠ। সরকার রাজধানীর আশপাশের নদী রক্ষার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করলেও অস্থায়ী ময়লার ভাগাড় সরানোর কোন পদক্ষেপ নেই। তাই নদী পাড়ের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

স্থানীয় বাসিন্দা আছমা আক্তার রূপা বলেন, শিশুদের বিদ্যালয়ে নেওয়ার জন্য প্রতিদিন নদী পারাপারের সময় এ নদীর পঁচা পানির দুর্গন্ধে বিরক্ত হই। আবার কাঞ্চন খেয়া ঘাটের পাশে ময়লার ভাগাড় থাকায় এ অবস্থা আরো শোচনীয়।

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার মুড়াপাড়া বাজার, তারাবো বাজার, ডেমরার চনপাড়া বস্তি, বেলদী বাজার ও আতলাপুর বাজারসহ নদী পাড়ের হাট বাজারের সকল আবর্জনা ফেলার স্থান হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে শীতলক্ষ্যাকে। একইভাবে নদী পাড়ের শিল্প-কারখানার বর্জ্য ফেলা হচ্ছে নদীতে। উপজেলার মুড়াপাড়ার ক্রিস্টাল সল্ট কারখানার লবণের খাঁদ ফেলে মিঠা নদীর পানিতে লবণাক্ত করে তুলেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে জেলেরা। আগের তুলনায় মাছ না পেয়ে অতিকষ্টে জীবিকা নির্বাহ করছে। অভিযোগ রয়েছে, ইটিপি প্লান বাস্তবায়ন না করায় এ সমস্যা বেড়েই চলছে।

রূপগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মীর আব্দুল আলীম বলেন, নদী বাঁচাও আন্দোলনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবৎ নদী রক্ষার জন্য নানা সচেতনমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছি। তথাপিও একটি পক্ষ জোর করেই নদীকে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করছে। যা মেনে নেওয়া যায় না। নদী মাতৃক এ দেশ রক্ষায় নদী রক্ষার বিকল্প নাই।

কাঞ্চন পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, কাঞ্চন বাজারের ময়লা ফেলার জন্য নতুন স্থান তৈরির চেষ্টা করছি। কোন অবস্থাতেই ময়লা ফেলতে দেওয়া হবে না। নদী রক্ষায় প্রশাসনকে সহযোগিতা করা হবে।

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম বলেন, নদী রক্ষায় ইতোমধ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। ময়লার ভাগাড় বিষয়ে জানলাম।

সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানা মালিক, জনপ্রতিনিধিদের তা সরিয়ে নিতে নোটিস করা হয়েছে। এরপরও কোন পক্ষ এমন কাজে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 
Electronic Paper