ভৈরব-ময়মনসিংহ রেলপথ বেহাল
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
🕐 ৭:২৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৯
ভৈরব-ময়মনসিংহের ১৩২ কিলোমিটার রেলপথ বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্বে অবহেলা আর গাফিলতির কারণে রেলপথ থেকে সরে গেছে পাথর। গজিয়েছে সবুজ ঘাস। এমন কি কোথাও কোথাও সরে যাচ্ছে মাটি, প্রতিনিয়ত চুরি হচ্ছে ক্লীপ। ফলে নড়েবড়ে অবস্থা ভৈরব-ময়মনসিংহ রেলপথের।
অথচ এ রেলপথের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ভৈরবে রয়েছে শতাধিক কর্মচারী। আর তাদের নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে সহকারী নির্বাহী প্রকোশলীর অফিস। দিনের পর দিন আর বছরের পর বছর ধরে দায়িত্বে অবহেলা আর গাফিলতির কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে এই রেলপথ। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
এসব দুর্ঘটনার কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকা পড়ে সীমাহীন ভোগান্তি আর দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে হাজার হাজার যাত্রীরা। যেন দেখার কেউ নেই। শুধু তাই নয়, এই রেলপথের কালিকাপ্রসাদ রেলওয়ে স্টেশনটি কাগজে কলমে চালু থাকলেও গেল ৫ বছর ধরে নেই মালামাল বুুকিং কিংবা টিকেট বিক্রির কোন কার্যক্রম। অথচ প্রতিদিনই থামছে ট্রেন, ওঠা-নামা করছে যাত্রীরা।
স্থানীয় রেলওয়ে অফিস সূত্রে জানা গেছে, ভৈরব-ময়মনসিংহ রেলপথে ২১টি রেল স্টেশন রয়েছে। এরমধ্যে লোকবলের অভাবে বছরের পর বছর ধরে কালিকাপ্রসাদ, ছয়সূতি, হালিমপুর, বোকাইনগর, নীলগঞ্জ ও যশোদলসহ বেশ কয়েকটি স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, এই পথের বন্ধ স্টেশনগুলোতে বছরের পর বছর ধরে কোন কার্যক্রম না থাকার কারণে ব্যবসায়ীরা করতে পারছে না মালামাল বুকিং আর যাত্রীদের মিলছে না টিকেট। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ভূক্তভোগীরা। অথচ এসব বন্ধ স্টেশনে প্রতিদিনই থামছে একাধিক ট্রেন, ওঠা-নামা করছে শত শত যাত্রীরা। বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণের ফলে সরকার প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। তাছাড়া একাধিক অরক্ষিত রেল ক্রসিং রয়েছে। আর সেতু গুলোতে বাঁশের বদলে দেখা মিলেছে কাঠের হালকা সেপটি।
কালিকাপ্রসাদের আনোয়ার হোসেন, মজনু মিয়া ও শিপন মিয়া জানান, ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এই রেলপথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাজার হাজার যাত্রীরা প্রতিদিন যাতায়াত করলেও কিংবা একের পর এক ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটলেও টনক নড়নি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের।
কুলিয়াচরের ট্রেন যাত্রী নাজমুল মিয়া জানান, ভৈরব-ময়মনসিংহ রেলপথে গেল দেড় মাসে তিনবার ট্রেন লাইনচ্যূতির ঘটনা ঘটেছে। অথচ এ নিয়ে কারোই কোনো মাথা ব্যাথা নেই। তাই যত দ্রুত সম্ভব সরকার এই রেলপথ উন্নয়নের মাধ্যমে নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণ নিশ্চিত করবে। একই সঙ্গে দোষীদের বিরুদ্ধে নেবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। এমনটাই প্রত্যাশা এই অঞ্চলের হাজার হাজার যাত্রীরা।
ভৈরব স্টেশন মাস্টার কামরুজ্জামান বলেন, আসলে কিছুটা হলেও দায়িত্বে অবহেলা রয়েছে। তাছাড়া রেল লাইন দেখে রাখা সকলের দায়িত্ব বলে মনে করেন তিনি।