ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

৪০০ বছরের দিল্লির আখড়া

সাজন আহম্মেদ পাপন, কিশোরগঞ্জ
🕐 ৮:৫৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৯

কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কাটখাল ইউনিয়নে হিজল বনে এক মনোরম স্থান দিল্লির আখড়া। বর্ষায় দর্শনার্থীদের এক প্রিয় গন্তব্য এ দিল্লির আখড়া। প্রকৃতি ছাড়াও হাওরে পর্যটকদের দেখার মতো বেশকিছু জায়গা রয়েছে। কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কাটখাল ইউনিয়নের দিল্লির আখড়ার মধ্যে অন্যতম। এখানে রয়েছে শত শত হিজল গাছ। চারশ’ বছরের পুরনো এ আখড়া সম্পর্কে সুন্দর একটি গল্প আছে। এক সাধক নাকি এখানে এসেছিলেন ধ্যান করতে। তার ধ্যান ভাঙার জন্য কিছু দৈত্য তাকে নানাভাবে বিরক্ত করত। একদিন সাধক মহাবিরক্ত হয়ে তার দীক্ষাগুরুর মন্ত্রবলে দৈত্যগুলোকে হিজল গাছ বানিয়ে রাখেন।

দিল্লির সম্রাট জাহাঙ্গীরের লোকজন একদিন ওই ধ্যানমগ্ন সাধকের পাশ দিয়ে নৌকার বহর নিয়ে নদীপথে যাচ্ছিলেন। এ সময় সোনার মোহর ভর্তি একটি নৌকা পানিতে ডুবে যায়। নৌকার যাত্রীরা মোহর তোলার জন্য নদীপাড়ে আসেন। ডুব দিয়ে তারা দুই একটি মোহর তুলেও আনেন। কিন্তু সেই মোহরগুলোও চোখের ইশারায় পানিতে ফেলে দেন ওই সাধক। পরে নৌকার যাত্রীদের অনুরোধে তিনি সোনার মোহরগুলো মাছের ঝাঁকের মতো পানির ওপর ভাসাতে থাকেন। মোহরগুলো তুলে নেন যাত্রীরা। এ ঘটনা শুনে ম্রারাট জাহাঙ্গীর অভিভূত হন। পরে তিনশ’ একর জমি ত্রাম্রলিপির মাধ্যমে সেই সাধুর আখড়ার নামে দান করে দেন। সেই থেকে এটি দিল্লির আখড়া।

আখড়ায় রয়েছে ধর্মশালা, নাটমন্দির, অতিথিশালা, পাকশালা ও বৈষ্ণবদেব থাকার ঘর। বর্তমানে আখড়ায় মোহন্ত নারায়ণ দাসসহ তিনজন বৈষ্ণব আছেন। এখানে আশ্রিত হয়ে আছে ৪০-৫০ জন শ্রমজীবী মানুষ। সবাই নিরামিষভোজি। থাকে একটি যৌথ পরিবারের মতো। রাতে এখানে দর্শনার্থীদের থাকারও ব্যবস্থা আছে। আখড়ার পাশে রয়েছে ঘের দেওয়া দুটি পুকুর। ইচ্ছে করলে পুকুরের ঘাটলায় বসে কাটিয়ে দেওয়া যাবে একটা বিকেল।

 
Electronic Paper