ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শতবর্ষী পেল পরিবার

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
🕐 ৯:৩৯ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২৪, ২০১৯

জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও কষ্ট আর অপমান সয়ে বাঁচতে ইচ্ছে করে না নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের শতবর্ষী বন্দর আলীর। কারণ, নিজের সন্তানদের কাছ থেকে পাওয়া অবজ্ঞা তার কাছে মৃত্যুর চেয়েও যন্ত্রণাদায়ক। মাথার ওপর ঠাঁই, তিন বেলা খাবার দেবে না সন্তানরা এটা তার কাছে সবচেয়ে কষ্টের। শেষ পর্যন্ত অসহায় হয়ে সন্তানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেন থানায়। শতবর্ষী বৃদ্ধের অসহায়ত্ব শুনে তার সন্তানদের তলব করে পুলিশ। কাজে লাগানো হয় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকেও। চাপে পড়ে ঠিকমতো খাওয়া-পরার মুচলেকা দিয়ে তাকে নিয়ে যান সন্তানরা। পুলিশ তাদের জানিয়ে দেয়, বন্দর আলীর বিষয়টি নিয়ে তারা নিয়মিত খোঁজখবর রাখবে। অযত্ন হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর তার জন্য মাসোহারার ব্যবস্থাও করা হবে।

গত মঙ্গলবার সোনারগাঁ থানায় যান বন্দর আলী। উপজেলার চরভবনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা তিনি। থানায় গিয়ে খুঁজতে থাকেন দারোগা আবুল কালাম আজাদকে।

তাকে বন্দর আলী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘বাবা তুমি আমারে বাঁচাও। আমার পোলা, পোলার বউ খাওয়ন দেয় না এবং খোঁজখবর রাখে না, মারে।’ দারোগা আজাদ অভিযোগ শুনে বন্দর আলীকে নিয়ে যান চরভবনাথপুর গ্রামে। গিয়ে দেখেন প্রবীণ মানুষটির জীবনের করুণ চিত্র। গোয়াল ঘরের মতো একটি ছাপড়ায় থাকেন বৃদ্ধ। পরে স্থানীয়দের নিয়ে সালিশে বসে বৃদ্ধের সন্তানরা পিতাকে খাওয়া-পরার মুচলেকা দেন। এ বিষয়ে উপপরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মুচলেকা দিয়েও যদি তারা ভরণপোষণের দায়িত্ব না নেয় তাহলে এই বৃদ্ধ বাবার দায়িত্ব আমি নিলাম।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোশাররফ হোসেন জানান, তার ছেলেরা পর্যায়ক্রমে দেখাশোনা করবে। আর পুলিশ কর্মকর্তা আজাদ এবং আমি প্রতি সপ্তাহে বন্দর আলীর জন্য পাঁচশ টাকা করে দেব।

মোশাররফ হোসেন জানান, বন্দর আলী ১২৮ বললেও মূলত বয়স ১০৮ বছর। তার তিন স্ত্রী ছিলেন, সন্তান আটজন। এক মাস আগে তৃতীয় স্ত্রী ফুলবাহারও মারা যান। এরপর থেকেই দুর্দশা শুরু।

 
Electronic Paper