রূপগঞ্জে নিয়ম মানছে না ডাইং কারখানাগুলো
মাহবুব আলম প্রিয়, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
🕐 ৯:১৭ অপরাহ্ণ, জুন ১৩, ২০১৯
প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়ে চলছে রূপগঞ্জে যত্রতত্র গড়ে ওঠা ছোট-বড় শতাধিক ডাইং কারখানা। এ ছাড়াও কোনো ধরনের নিয়মনীতি না মেনে কারখানাগুলোর বর্জ্য এলাকার পরিবেশ দূষণ করে যাচ্ছে। এতে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এলাকার মানুষ। সবকিছু জেনেও প্রশাসন রয়েছে নীরব।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কারখানাগুলো সরকারের কোনো প্রকার অনুমোদন বা লাইসেন্স না থাকায় প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। প্রশাসন ও স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করে রূপগঞ্জে এ রকম শতাধিক ডাইং কারখানায় অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল সাওঘাট এলাকায় রয়েছে নূরে মদিনা ডাইং, সাওঘাট কাতরারচক এলাকায় ফুজি ডাইং ও মিতা ডাইং, গোলাকান্দাইল হাটসংলগ্ন পূর্বপাড়া এলাকায় হাসান ডাইং, গোলাকান্দাইল উত্তর পাড়া এলাকায় জামান ডাইং কারখানা পরিবেশ দূষণের জন্য যেমন দায়ী তেমনি ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি করছে। এদের দূষিত বর্জ্য ফসলি জমিতে সরাসরি গিয়ে পড়ছে। এতে করে গোলাকান্দাইল, সাওঘাট, মাহনা, আধুরিয়া ও দড়িকান্দি এলাকার প্রায় ৭শ একর জমির ফসল বিনষ্ট হচ্ছে।
গোলাকান্দাইল পূর্বপাড়া এলাকায় হাসান ডাইং কারখানা গড়ে ওঠার ফলে এলাকাবাসী পড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। এলাকার অনেকেই বিভিন্ন প্রকার রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ কারখানার বর্জ্যরে পানি সরাসরি টাটকী খালে গিয়ে পড়ছে। এতে গোলাকান্দাইল ও দড়িকান্দি মৌজার কয়েকশ একর জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। এ নিয়ে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলেও কর্ণপাত করছে না কারখানা কর্তৃপক্ষ।
প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ডাইং কারখানা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। হাসান ডাইং কারখানার আশপাশে প্রায় চার হাজার পরিবার স্থায়ী ও অস্থায়ীভাবে বসবাস করছে। কারখানাটি দুই বছর ধরে চালু রয়েছে। গ্যাস সংযোগ না পেয়ে কয়লা দিয়ে কারখানাটি চালিয়ে আসছে। ফলে কারখানার কালো ধোঁয়া ও কেমিক্যাল মিশ্রিত পানিতে নানা ধরনের রোগ সৃষ্টি হচ্ছে। ম্যালেরিয়া, শ্বাসকষ্ট, এজমাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছে লোকজন।
জানা যায়, ডাইং কারখানার মালিক মো. হাসান মিয়া পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ও ইটিপি প্লান্ট না নিয়েই জনবসতিপূর্ণ এলাকার মধ্যে কারখানা নির্মাণ করে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি করে আসছে। কারখানার বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এলাকাবাসী মহাসড়ক অবরোধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার ডাক্তার ইলিয়াস জানান, বর্জ্যরে পানি পুকুর, ডোবা, খাল-বিলে জমা হচ্ছে। এতে বাড়ছে ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম বলেন, শিশুশ্রম বেআইনি। তা ছাড়া জনবসতিপূর্ণ এলাকায় এ ধরনের কারখানা নির্মাণ করে পরিবেশের ক্ষতি করা যাবে না। শিগগিরই এসব কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।